জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অনিয়ম; চুক্তি ভঙ্গ করে অতিরিক্ত টাকা আদায়

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম; চুক্তি ভঙ্গ করে অতিরিক্ত টাকা আদায়
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম

রাজধানীর কালশীতে মধ্যবিত্তদের জন্য নির্মিত ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অনিয়ম এর অভিযোগ উঠেছে।

ফ্ল্যাট মালিকদের দাবি প্রস্তাবিত মূল্যের অতিরিক্ত ১৪ লাখ টাকা আদায় করেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও ফ্ল্যাট নির্মাণে নকশা না মানা এবং নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগও করছেন কেও কেও।

তবে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের দাবি যৌক্তিক কারণেই বাড়ানো হয়েছে ফ্ল্যাটের দাম।

স্বপ্ননগর আবাসিক প্রকল্প, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ১০টি বহুতল ভবনে মধ্যবিত্তদের জন্য ১ হাজার ৪০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ৩০টি ফ্ল্যাট।

তবে আশাজাগানিয়া খবরের মধ্যেও হাসি নেই ফ্ল্যাট মালিকদের মুখে। কারণ দখল বুঝে নিতে মালিকদের চুক্তির অতিরিক্ত ১৪ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। যা অযৌক্তিক বলছেন মালিকরা।

এক মালিক বলছেন, “শেষ মুহুর্তে এসে কর্তৃপক্ষ বলছে যে ১৪ লাখ টাকা বাড়ানো হচ্ছে। এখন হঠাৎ এতো টাকা কোথায় পাবো?”

আরেক মালিক বলছেন, “গত ৩ বছরে আমাদের বাড়তি ৯/১০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। এখন এই ঘটনা অতিরিক্ত বোঝা হয়ে গেছে। আমরা কোন ভাবে এটা সমণ্বয় করতে পারছি না।”

শুধু তাই নয়, ফ্ল্যাট নির্মাণে নকশা বহির্ভুতভাবে প্রতি ভবনের ২য় তলায় অতিরিক্ত ৪টি ইউনিট নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে।

মালিকরা বলছেন, ফ্ল্যাটে কোন ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করছে তা দেখার কোন সুযোগ তারা পায় নি। একটি ক্লাব হাউজ হবার কথা ছিল, তাও হয়নি।

তবে এসব অস্বীকার করে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি যৌক্তিক কারণেই দাম বাড়ানো হয়েছে।

তারা বলছেন খেলার মাঠ,ওয়াক ওয়ে, মসজিদ ও বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন এখানকার বাসিন্দারা।

গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জোয়ারদার তাবেদুন নবী বলছেন, “সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ীই কিন্তু যে টাকাটা নেওয়া হয়েছে (৭৮ লক্ষ টাকা) সেটা এসেছে। এটা ঠিক প্রথমে দেওয়া প্রতিশ্রুতির তুলনায় প্রত্যেকের ১৪ লক্ষ টাকা বেড়েছে  তবে এর জন্য ১ শতাংশ জমির মালিকও হবেন তারা। এই ১ শতাংশ জমির দামই কিন্তু ওখানে বর্তমান বাজার দর অনুসারে ৪৫-৫৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।”

আরো পড়ুন:
নেটফ্লিক্সে বাংলাদেশ ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে ফারুকীর ‘ডুব’ 
দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ

কিন্তু চুক্তির পর অতিরিক্ত টাকা আদায় গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলছেন ফ্ল্যাটের দাম মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালে রাখা উচিত।

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবীব বলছেন, “জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত অধ্যাদেশ ২০১০ অনুযায়ী এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভবন নির্মাণকালীন সময়ে ফ্ল্যাট মালিকদের সাথে প্রথম অবস্থায় যে মূল্যে চুক্তি সম্পাদন করা হয় তা পরবর্তীতে পরিবর্তন করা যায় না। সুনির্দিষ্ট এবং চু্ক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়া এই মূল্য বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য।”

কালশীতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অনিয়ম নিয়ে আরও একটি প্রকল্পে ধার্যকৃত মূল্যের অতিরিক্ত ১ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন মালিকরা।

subscribe to our youtube channel 2

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন