এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হওয়া সবচাইতে ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইস
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হওয়া সবচাইতে ছোট ক্যামেরা
আপনি যদি ১৯ শতকের দিকে জন্ম নিয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চই সাদা কালো টিভি দেখেছেন, বিশাল আকারের সেই টিভিগুলো সামনের দিকে যতটা না বড় ছিল এর থেকেও বোধহয় বড় তার পেছনের অংশ ছিল ৩ থেকে পাঁচ গুণ বড়।
ভাবুন তো একবার কেমন হতো যদি সেসময়ে আপনি টেলিভিশন কে আপনার হাতে থাকা ঘড়ির মধ্যে দেখতে পেতেন, আজ আমরা জানতে চলেছি আমাদের পৃথিবীতে আবিস্কৃত হওয়া এমন কিছু ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পর্কে যা হয়তো আপনাকে সত্যি অবাক করে ছাড়বে।
ছোট ক্যামেরা –
হয়তো ভাবছেন এত ছোট ক্যামেরা কিভাবে সম্ভব! কারণ সাধারণভাবে আমরা দেখে আসছি রিল ক্যামেরা, মোবাইল ক্যামেরা ডিএসএলআর অথবা মিনি ক্যামেরা। যার মাধ্যমে বিভিন্ন সাংবাদিক কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা তাদের তদারকি করে থাকেন।
তবে শুনতে খানিকটা অবাক শুনালেও, মাইক্রো ক্যামেরা আবিষ্কারের এই অসম্ভব কাজটিকেই একদল বিজ্ঞানী সম্ভব করে দেখিয়েছেন। যার নাম হচ্ছে Omni Vision OV6948.
গিনেস বুক অফ রেকর্ডে লিপিবদ্ধ হওয়া এই ক্যামেরাটির দৈর্ঘ, প্রস্ত এবং উচ্চতা হচ্ছে যথাক্রমে 0.575 x 0.575 x 0.232 mm (মিলি মিটার) মূলত এই ক্যামারাটি তৈরি করা হয়েছে মেডিকেল সাইন্সের জন্য।
বিভিন্ন অপারেশন তাছাড়া শরীরের ভেতরের নানা অংশকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য এই ক্যামেরা আবিষ্কার করা হয়েছে। যার মাধ্যমে দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরীক্ষা, চিকিৎসা বিজ্ঞানের নানা ধরণের জটিল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
৪০ হাজার কালার পিক্সে সমৃদ্ধ এই ক্যামেরা বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের অন্যতম সেরা আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। যা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।
ছোট মোবাইল সেট –
আপনি কি জানেন পৃথিবীতে প্রথম আবিষ্কৃত হওয়া মোবাইল সেট ছিল কোনটি? তাছাড়া সেটি কতটুকুইবা বড় ছিল। মোটোরোলা কোম্পানিতে কর্মরত ডঃ মার্টিন কুপার এবং জন ফ্রান্সিস মিচেলক প্রথম মোবাইল ফোন আবিস্কার করেন।
১৯৭৩ সালে প্রায় ১ কেজি ওজনের এই মোবাইল ফোন তারা আবিষ্কার করেছিলেন। যেটি ছিল ১০ ইঞ্চি লম্বা, দুই ইঞ্চি চওড়া, এবং ৪ ইঞ্চি উঁচু। তবে বিজ্ঞানের আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই ১০ ইঞ্চি থেকে মোবাইল ছোট হতে হতে এখন প্রায় মুঠোবন্ধি হয়ে গিয়েছে।
সবচাইতে ছোট মোবাইল
পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি বিশ্বের সবচাইতে ছোট ফোন জ্যানকো টাইনি টি ১ এর সাথে।দূর থেকে দেখে আপনি হয়তো একে খেলনাও ভাবতে পারেন, তবে আপাত দৃষ্টিতে এটি একটি সত্যিকারের মোবাইল ফোন।
যে ফোনটির আকৃতি আপনার বৃদ্ধা আঙ্গুলের থেকেও ছোট এবং এর ওজন সাধারণ একটি কয়েনের সমমান।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে নরমাল বাটনওয়ালা ফোন দিয়ে যা কিছু করা সম্ভব তার প্রায় সকল সুবিধা আপনি এই জ্যানকো টাইনি টি ১ মোবাইলের ভেতরে পাবেন। তাছাড়া এটি যেকোনভাবে বহন করতে পারায়, আপনি খুব সহজেই একে বিভিন্ন স্থানে রাখতে পারবেন।
ছোট টিভি –
আপনি হয়তো গত ১০ বছর পূর্বেও বিশাল আকারের টিভি দেখেছেন। বর্তমান ফ্লাট টিভিগুলোর সাথে যার তুলনা করা বোধহয় নিছক বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ছোট টিভিটি কিন্তু আরো প্রায় ৩৯ বছর পূর্বে অর্থাৎ ১৯৮২ সালে আবিষ্কার করা হয়েছিল।
সবচাইতে ছোট টেলিভিশন
বিশ্বের অন্যতম স্বনামধন্য ঘড়ি কোম্পানি সিকো তাদের ঘড়ির মধ্যে এমন অসাধ্য কাজটি করে দেখিছিল সেসময়। যদিও একে চালনা করার জন্য আরো একটি ছোট ডিভাসের প্রয়োজন হতো। যার মধ্য থেকে টিভির সকল যস্ত্রাংশ পরিচালনা সহ ইয়ারফোন যোগ করে সেই ঘড়ির মধ্যে টিভি স্ক্রিন দেখানো হতো।
ভেবে দেখুন একবার, বর্তমান সময় এমন ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব হলেও গত ৪০ বছর পূর্বে এটি কিন্তু অনেকটাই স্বপ্নের মতো ছিল। যে স্বপ্ন সত্যি করে দেখিয়েছিল সিকি কোম্পানি। উল্লেখ্য, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে এই ঘড়িটিও কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচাইতে ছোট টিভি বলে উল্লেখিত।
ছোট ব্যাটারি–
যেকোন ডিভাইস চালনা করার জন্য ইলেক্টিক চার্জ বা ব্যাটারি খুবই প্রয়োজনীয় একটি বস্তু। কালের পরিবর্তনে বড় থেকে সরু করে পেন্সিল ব্যাটারি কিংবা ঘড়ির ছোট ব্যাটারিও আমরা দেখতে পাচ্ছি। যদিও আমি কথা বলছি এর থেকেও আরো ছোট ব্যাটারি সম্পর্কে।
সম্প্রতি হার্বাড ইউনিভার্সিটি সহ বেশ কিছু ইউনিভার্সিটির রিসার্চ টিম আবিষ্কার করেছে মাইক্রো ব্যাটারি। যাকে খালি চোখে দেখা গেলেও এর ধরণ বুঝতে অবশ্যই আপনাকে মাইক্রোস্কোপের সাহায্য নিতে হবে।
সবচাইতে ছোট ব্যাটারি
বিভিন্ন ডিভাইসে ব্যটারির প্রয়োজনীতার ক্ষেত্রে তারা এই ব্যাটারিগুলো আবিষ্কার করেন। যা তৈরি করা হচ্ছে সম্পূর্ণ থ্রিডি প্রেন্টিংয়ের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, গিনিস বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এখন পর্যন্ত সবচাইতে ছোট ব্যাটারি হিসেবে এই মাইক্রো ব্যাটারিকে উল্লেখ করা হয়েছে।
সবচাইতে ছোট ড্রোন –
আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো বিশ্বের সবচাইতে ছোট ড্রোন এরিয়াসের সাথে। যার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ যথাক্রমে ৩ সেন্টিমিটার এবং এর উচ্চতা হচ্ছে মাত্র ২ সেন্টিমিটার।
সবচাইতে ছোট ড্রোন
চারটি ভিন্ন রঙের এ ড্রোনগুলো চার্য হতে সর্বোচ্চ সময় নেয় ১৫ থেকে ২০ মিনিট। যার ফলে এটি একসাথে ৫ থেকে ৭ মিনিট পর্যন্ত উড়তে সক্ষম।
এ সম্পর্কিত আমাদের ভিডিওটি দেখতে চাইলে ক্লিক করুন,