গুসবাম্প কি? ঠান্ডা বা ভয়ে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাওয়ার পেছনে ব্যাখ্যা কি?
গুসবাম্প কি? ঠান্ডা বা ভয়ে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাওয়ার পেছনে ব্যাখ্যা কি?
মধ্যরাতে জানালার পাশ থেকে হঠাৎ ভয়ংকর কোন শব্দ ভেসে আসলে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাওয়া, এমন অনুভূতির অভিজ্ঞতা কমবেশি আমাদের সবার মধ্যেই রয়েছে।
কিংবা গোসলের সময় বিশেষ করে শীত কালে গায়ে ঠান্ডা পানি লাগালেও প্রথমেই যেটি হয় সেটি হচ্ছে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাওয়া।
কিন্তু শরীরের লোম আসলে কেন দাঁড়িয়ে যায়?
আবেগের একধরনের শারীরবৃত্তীয় প্রকাশ হলো শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাওয়া। এটি হলে সাধারণত হাত, পা বা কাঁধের লোম সোজা হয়ে যায়। লোমের সাথে ত্বকের কিছুটা অংশ এবং হেয়ার ফলিক্যাল ফুলে ওঠে।
মেডিকেলের ভাষায় একে বলা হয় পিলোইরেকশন, কিউটিস অ্যানসারিনা এবং হরিপিলেশন।
তবে মনে রাখার জন্য সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত শব্দ হচ্ছে গুসবাম্প। এর অর্থ হচ্ছে- ত্বকের যে জায়গাটি ফুলে ওঠে সেটি দেখতে পালক তুলে ফেলা পাখির মতোই দেখায়।
কখন লোম দাঁড়ায়?
হঠাৎ করে শীত লাগলে গুসবাম্প হয়। এছাড়া আবেগীয় নানা বিষয় যেমন- ভয়, দুঃখ, আনন্দ এবং যৌন অনুভূতি হলেও গুসবাম্প হতে পারে।
এছাড়া ছোটখাট কোন শারিরীক কর্মকান্ডের জন্যও গুসবাম্প হয়। যেমন- পরিপাক তন্ত্র সক্রিয় হলে অনক সময় গুসবাম্প হয়। আর অনেক সময় কোন কারণ ছাড়াই লোম দাঁড়িয়ে যাওয়া বা গুসবাম্প হতে পারে।
শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণ কী?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লোম দাঁড়িয়ে যাওয়া বা গুসবাম্প আসলে শরীরকে গরম রাখার জন্য হয়ে থাকে। বিশেষ করে হঠাৎ শীতের অনুভূতি থেকে যে গুসবাম্প হয় সেটা আপনার শরীরকে গরম করে। শরীর গরম হয়ে গেলে গুসবাম্পও মিলিয়ে যায়।
বিজ্ঞানের ভাষায় বলতে গেলে মানুষের শরীরে যেসকল হরমোন নিঃসৃত হয় তার মধ্যে একটি হচ্ছে এড্রেনালিন হরমোন।
ভয় পেলে বা হঠাৎ করে শীত লাগলে এই হরমোন নিঃসৃত হয়। এবং শরীর এর প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখায়। এর অংশ হিসেবে লোমকূপে থাকা ছোট এক ধরণের ক্ষুদ্র মাংসপেশী ফুলে ওঠে। যা লোম বা হেয়ার ফলিক্যালকে ঠেলে উপরে তোলে বা সোজা করে দেয়।
আর এটি চামড়া বা ত্বকের উপরের অংশেও বোঝা যায়। এই ছোট মাংসপেশীগুলো লোমের ঠিক গোড়ায় থাকে। যেখানে ত্বক মোচড় খায়।
যার ফলসরূপ লোম দাঁড়িয়ে যাওয়া বা গুসবাম্প হয়।
গবেষকরা বলছেন, মানুষের লোম কেন দাঁড়িয়ে যায় তার তথ্যানুসন্ধান করতে হলে মানুষের পূর্বপুরুষ বা এ্যাপর্সের দিকে নজর দিতে হবে।
এ্যাপর্সদের শরীর অনেক বেশি লোমে আবৃত ছিল। তখন শীত অনুভব হলে লোমগুলো দাঁড়িয়ে যেত। যাতে করে ত্বকের চারপাশে বাতাসের একটি আবরণ তৈরি হয় এবং শরীর গরম থাকে।