সঠিকভাবে পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের নিয়ম কি? কেন আসতে পারে ভুল রিডিং?

সঠিকভাবে পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের নিয়ম কি? কেন আসতে পারে ভুল রিডিং?
সঠিকভাবে পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের নিয়ম কি? কেন আসতে পারে ভুল রিডিং?

পালস অক্সিমিটার- এই করোনাকালীন সময় যন্ত্রটিকে মানুষের কাছে আবারো নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এই পালস অক্সিমিটারের মূল কাজ হচ্ছে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও হৃদস্পন্দনের গতি নির্ণয় করা।

রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা জানা এই সময়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পালস অক্সিমিটারে দুইটি জিনিস লক্ষ্য করা যায়। একটি হচ্ছে-

এসপিওটু- যেটি শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা বুঝায়

পালস রেট- যেটি হৃদস্পন্দনের গতিবিধি বুঝায়

সাধারণত মানুষের রক্তে ৯৫-১০০ শতাংশ পর্যন্ত অক্সিজেন থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু অক্সিমিটার যন্ত্রের এসটিওটু তে যদি ৯৫ শতাংশের নিচে দেখায় তাহলে সেটা অস্বাভাবিক।

অনেক সময় পালস অক্সিমিটার ভুল রিডিং দেয়। সেটা বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণেও দেয়। আবার অক্সিমিটার নষ্ট হলেও দেয়।

এক্ষেত্রে জেনে রাখা প্রয়োজন কখন কখন অক্সিমিটার ভুল রিডিং দিতে পারে।

যেসব কারণে পালস অক্সিমিটার ভুল রিডিং দেয়-

• সঠিকভাবে আঙুল না বসলে: পালস অক্সিমিটার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করে আঙুলে মাধ্যমে। যন্ত্রের ভেতরের ফাঁকা অংশে আঙুল রাখলেই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা এবং হৃদস্পন্দনের গতিবিধি জানা যাবে।

কিন্তু এই ফাঁকাস্থানে ঠিকঠাক মতো আঙুল বসাতে না পারলে ভুল রিডিং দিবে।

• যে আঙুল অক্সিমিটারে ঢুকানো হয় তাতে কোন প্রলেপ থাকলে: যে আঙুল দিয়ে যন্ত্রটি ব্যবহার করছেন তাতে নেল পলিশ, মেহেদি বা ট্যাটু কিংবা অন্য কোন প্রলেপ থাকলেও ভুল রিডিং আসবে।

কোন কারণে শরীরে কাঁপুনি হলে: হয়তোবা আপনার জ্বর। শরীর বা হাত কাঁপছে। তখন যদি আপনি অক্সিমিটারের সাহায্যে পালস মাপতে যান আপনার ভুল রিডিং আসবে।

এধরণের যেকোন কাপুনির সময় কিন্তু পালস অক্সিমিটারের রিডিং ভুল আসবে।

• ঘুমন্ত অবস্থায়: জেনে রাখা ভাল- ঘুমন্ত অবস্থায় মানুষের শরীরের অক্সিজেনের তারতম্য দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ঘুমন্ত অবস্থায় অক্সিজেন মাপার চেষ্টা করলে অক্সিমিটার ভুল রিডিং দিবে।

পালস অক্সিমিটার ভুল রিডিং দিলে কি করবো?

পালস অক্সিমিটারে আপনি দেখলেন যে হঠাৎ করে ৯০/৯২ শতাংশ তাহলে সাথে সাথেই ঘাবড়ে যাবার কোন কারণ নেই। প্রথমে এর সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে।

অক্সিমিটার যে আসলেই ভুল রিডিং দিচ্ছে তা সম্পর্কে আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে। এজন্য-

– যদি এমন কিছু দেখেন তখন আপনি নিশ্চিত হবার জন্য আরেক জনের হাতে দিতে পারেন। সেখানে যদি ঠিকঠাক মাত্রা দেখায় তাহলে বুঝতে হবে যন্ত্রটি ঠিক আছে

আর যদি ভুল দেখায় তাহলে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

– রিডিং নেওয়ার পর ফলাফল দেখে আপনার খানিক সন্দেহ হলো। এরকম কিছু হলে আপনি কিছুক্ষণ সময়ের জন্য হেঁটে আসতে পারেন।

আরো পড়ুন:
করোনা রোগীর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে কি করবেন? 
করোনা রোগীর শরীরে অক্সিজেন কমলে ঠিক কখন হাসপাতাল যেতে হবে?
ডাবের ভেতরে পানি কীভাবে জমে? 

এরপর আবার মাপতে পারেন। তখনো যদি আপনার রিডিং কম দেখায় তাহলে বুঝতে হবে পালস অক্সিমিটারটির কোন এক জায়গায় সমস্যা হয়েছে।

এসকল পরীক্ষার পর যখন নিশ্চিত হবেন আপনার অক্সিমিটার সঠিক তথ্য দিচ্ছে তাহলে চিন্তার কিছুই নেই। সে অনুযায়ী আপনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

স্বাভাবিক থাকলে ভাল, নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। আর না থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। এটি হুমকিসরূপ।

করোনার সময় অক্সিমিটার ব্যবহার খুবই দরকারি। সংক্রমণের প্রথম দিন থেকেই এটি ব্যবহার করা উচিত।

কিন্তু পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই এর সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। তা না হলে রিডিং ভুল আসলে অযথা আতঙ্কিত হয়ে যেতে হবে। এবং ভোগান্তিতে পরতে হবে।

subscribe to our youtube channel 2

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন