তিমির আত্মহত্যা প্রবণতার ঘটনা কি সত্য? যা বলছেন বিজ্ঞানীরা-

তিমির আত্মহত্যা প্রবণতার ঘটনা কি সত্য? যা বলছেন বিজ্ঞানীরা
তিমির আত্মহত্যা প্রবণতার ঘটনা কি সত্য? যা বলছেন বিজ্ঞানীরা

মানুষ হোক বা অন্যান্য প্রাণী, প্রতিটি জীবই আবেগে ভরপুর। যেকোন প্রাণীকেই বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পার করে জীবনধারণ করতে। সম্প্রতি তিমির আত্মহত্যার কথা অনেক বেশি শুনা যাচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমরা কেউই নিশ্চিত নই। 

বিজ্ঞানীদের মতে সঙ্গীর শোকে তিমির আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। কিন্তু বিষয়টি কতখানি সত্য? এটা নিয়ে নানান মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে।

তিমি সাধারণত জোড়া বেধে চলতে পছন্দ করে। নারী-পুরুষ একজন অন্যজনকে সহজে ছেড়ে যায় না। বিপদে পড়লেও একজন আরেকজনকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করে সারাক্ষণ।  এটা তিমির সহজাত প্রবৃত্তি।

তবে একজন মারা গেলে আরেক জন সত্যিই আত্মহত্যা করে কি না তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখনো দ্বিমত রয়েছে।

বিষয়টি বলতে গেলে এক প্রকার অমিমাংসিতই। এখনো পরিষ্কার হয়নি কারও কাছে।

তবে সাগরের অতলে দূষণ, আহত হওয়া কিংবা অন্য যেকোন কারণে তিমিদের গভীর সমুদ্র থেকে সৈকতমুখী যাত্রা করা ও নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার ঐচ্ছিক যে প্রবণতা- একে ধারণাগত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বা হাইপোথিসিস অনুযায়ী whales stranding event বা তিমিদের আত্মহত্যা বলে অবহিত করা হয়।

তিমির আত্মহত্যার এই পরিভাষাটি ২ হাজার বছরের পুরোনো। সেই এরিস্টটলের আমল থেকে।

২০১৫ সালে বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ চিলির পাতাগুনিয়াতে ৩৩৭টি মৃত তিমি পান। যা বিজ্ঞানীদের কাছে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় তিমির আত্মহত্যার ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক প্রতিবেদনে এমনটাই উল্ল্যেখ করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, ডলফিন তিমি বা অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর শ্বাস নেওয়ার জন্য উপরে উঠে আসে।

আবার শিকারের জন্য তারা সাগরের অনেক গভীরে চলে যায়। এমনকি তারা ১ কিমি নিচে গিয়েও শিকার ধরে আনতে পারে।

আরো পড়ুন:
তিমি মাছ – প্রাণী জগৎ 
ডাবের ভেতরে পানি কীভাবে জমে?

কিন্তু ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বা যথাযথ ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস চালাতে ব্যর্থ হলে তিমিরা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পরে।

এসময় তারা জোয়ারের সঙ্গে সৈকতের দিকে আসতে থাকে এবং সৈকতে এসে আটকা পরে নিশ্চিত মৃত্যুর  ‍মুখে পরে যায়।

অসুস্থতার কারণে শ্বাসগ্রহণে বাধা পেয়েও তিমির মৃত্যু হয়। বিশ্বব্যাপী তিমি মৃত্যুর অর্ধেক কারণ সৈকতমুখী যাত্রা করা।

এছাড়া শিপিং এ শব্দ দূষণ সহ বেশ কিছু কারণেও তিমিরা সৈকতমুখী হয় বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অসুস্থ তিমির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে না সুস্থ তিমি।

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অসুস্থ তিমির সঙ্গে সুস্থ তিমিও সৈকতের দিকে নিজেকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

তিমিদের এই প্রবণতাকে বিজ্ঞানীরা তিমির আত্মহত্যা হিসেবে দেখে।

subscribe to our youtube channel 2

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন