দিন দিন গরম বাড়ছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বৃদ্ধির নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। রোদে-তাপে তেতে থাকা রাজপথে অল্প কিছুক্ষণ হাঁটলেই এখন তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাবার দশা। কিন্তু এখন রোগ-জীবাণুর এত ছড়াছড়ি, রাস্তাঘাটের কোন খাবার না খাওয়াই শ্রেয়। আর তাই বিশুদ্ধ পানীয় বলতে ডাবের পানির বিকল্প নেই। কিন্তু ডাবের ভেতরে পানি কিভাবে জমে তা কি আমরা জানি?
তৃষ্ণা মেটাতে অনেকে পথের ধারে ফলের রসে গলা ভেজান। কিন্তু এগুলোর বিশুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। সেক্ষেত্রে ডাবের পানি পান করা খুবই ভাল। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর তেমনি মেটাবে আপনার তৃষ্ণাও।
কিন্তু এদিকে আবার চলছে রমজান মাসে। তাই পানি খাওয়ার অপেক্ষা করতে হয় সেই ইফতার পর্যন্ত।
‘ডাবের ভেতরে পানি কীভাবে জমা হয়?’-খেতে খেতে এ প্রশ্ন যেকারো মাথায় আসতেই পারে। ডাবের পানি হলো কচি অবস্থায় নারিকেলের খোলসের ভেতরে থাকা তরল পানীয়।
একদম কচি অবস্থায় এর তেমন শাঁস অর্থ্যাৎ নারিকেলের যে সাদা অংশ তা থাকে না। যদি থেকেও থাকে তা হয় একেবারেই পাতলা গোছের, এর অধিকাংশটাই তরল।
মাটিতে বিভিন্ন প্রকার খনিজ পদার্থ এবং লবণ দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে। আমরা সবাই জানি উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির জন্য তা মাটি থেকে শেকড়ের সাহায্যে গ্রহণ করে, আর সেই রস নারিকেল গাছের কান্ড বেয়ে জমা হয় ডাবে!
মূলত নারিকেল গাছে রয়েছে অগণিত জালি। এই জালি গুলো জাইলেম নামে পরিচিত। উদ্ভিদকোষে গঠিত এইসকল জাইলেম উদ্ভিদের কান্ডের ভেতর দিয়ে ডালপালা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে।
উদ্ভিদের এই জাইলেমগুলো এত সরু হয় যে এগুলো ক্যাপিলারি নল হিসেবে কাজ করে। সরু ক্যাপিলারি নলগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর এক প্রান্ত কোনো তরল পদার্থে ডুবিয়ে রাখা হলে নলের ভেতর দিয়ে সেই তরল তরতর করে উপরের দিকে উঠে যায়।
মাটির নিচ থেকে পানি কীভাবে উপরের দিকে ওঠে, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে।
আমরা অনেকেই জানি যে, পানির সারফেস টেনশন পানিকে সরু নলের ভেতর দিয়ে উপরে ঠেলে দেয়। এভাবেই নারিকেল গাছ মাটি থেকে যে তরল গ্রহণ করে, সেটা ডাবের ভেতরে পানি হিসেবে জমা হয়।
শারীরিক পরিশ্রম করার ফলে মানবদেহ যে খনিজ ও প্রয়োজনীয় তরল পদার্থ হারায়, ডাবের পানি তা এক নিমিষেই পূর্ণ করে দিতে পারে।
এছাড়াও ডাবের পানিতে যেসকল উপাদান রয়েছে তা শরীরে কোষের বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। ডাবের পানি খেলে শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে না। তাই নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া উচিত।