ক্রিকেট খেলার জন্য অন্যতম প্রধান একটি উপকরণ হচ্ছে ক্রিকেট বল। যাকে ছুড়ে বলাররা বল করেন, আর ব্যাটসম্যানরা সেই বলকে তাদের হাতে থাকা ব্যাট দিয়ে মোকাবেলা করে থাকেন।
আজ আমরা জানবো ঠিক কিভাবে ক্রিকেট বলকে তৈরি করা হয় সে সম্পর্কে।
ক্রিকেট বল তৈরি করার জন্য প্রথমেই যে জিনিসটির প্রয়োজন হয় সেটি হলো খুবই মজবুত এবং শক্ত লেদার।
যেহেতু আমাদের দেশে প্রতিবছর কোরবানির ঈদে প্রচুর পরিমাণে চামড়া পাওয়া যায়, তাই বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি ক্রিকেট বল তৈরির জন্য আমাদের দেশীয় পশুর চামড়া গুলোকে প্রধান্য দিয়ে থাকে।
ক্রিকেট বল তৈরির জন্য প্রথমেই চামড়াগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে এর সাথে খানিকটা রং মিশিয়ে নেয়া হয়।
এরপর সেই চামড়াগুলোকে খানিকটা নরম করার জন্য হালকা পানিতে ভিজিয়ে সেগুলোকে বেধে, শক্ত কোন বস্তুর সাহায্যে পেটানো হয়।
যতক্ষণ পর্যন্ত সেই চামড়াগুলো নরম না হবে, ঠিক ততক্ষণ একে পেটানোর কাজ চালু রাখা হয়।
এরপর চামড়াগুলো কে নির্দিষ্ট মাপে কেটে, একে পর্যবেক্ষণ শেষে বল তৈরির কাজে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
চামড়া প্রস্তুত হয়ে গেলে, বলের মাপ অনুসারে সেই লেদার গুলোকে একটি ডাইসের মাধ্যমে সমান ভাবে কেটে নেয়া হয়।
এরপরে দুটি কাটা অংশকে সিলাইয়ের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে ক্রিকেট বলের অর্ধেক অংশ প্রস্তুত করা হয় ।
পরে সেই খন্ডিত চামড়ার অংশ দুটিকে একটি হাইড্রোলক প্রেসে চাপ প্রয়োগ করে পলিশ করে একেবারের জন্য জুড়ে দেওয়া হয়।
এবং এর সাথে জুড়ে থাকা বাড়তি চামড়াগুলোকেও ধারালো ব্লেডের সাহায্যে কেটে ফেলে সেগুলো একদম মসৃণ করা করা হয়।
মূলত এখানে দুটি জোড়া লাগানো অংশ হলেও বাহির থেকে একে দেখলে একটি বলেই মনে হয়।
অর্থাৎ আস্ত একটি বল তৈরির জন্য এরকম চারটি চামরার খন্ড কে সিলাই করে জুড়ে দেয়াহয়।
এর আগে অবশ্য ক্রিকেট বল নির্মাণকারীরা আরেকটি কাজকে গুছিয়ে নেয়।
আর সেটি হচ্ছে বলের ভেতরে থাকা ছোট কর্ক বল তৈরি।
কর্ক বল তৈরির জন্য প্রথমেই কর্ক কাছের বাকল বা নরম কাঠ সংগ্রহ করা হয়।
এরপর নরম বাকলগুলোর উপরে হাইড্রোলিক প্রেশার প্রয়োগ করে ছোট ছোট কর্ক বল প্রস্তুত করা হয়।
এবার সেই কর্ক বলের উপরে একটি রবারের অংশকে অত্যাধিক চাপ প্রয়োগ করে তার সাথে লাগিয়ে দেয় ।
অতপর এর উপরে উলের সুতার একটি প্রলেপকে জুড়ে দেয়া হয়।
যাকে ভাল ভাবে প্রস্তুতের জন্য বেশ কিছু দিন যাবৎ শুকিয়ে নিতে হয়।
কারণ এর উপরেই নির্ভর করে ক্রিকেট বলের সব কিছু।
জানা যায় ক্রিকেট বল শুকানোর এই প্রসেসটি ১ থেকে দেড় মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে।
শুকানো হয়ে গেলে সেই চামড়ার লেয়ার গুলোর ভেতরে একে ঢুকিয়ে আবারো সেলাই করে একে সম্পূর্ণ রুপে লাগিয়ে দেয়া হয়।
মূলত এই সেলাই হচ্ছে ক্রিকেট বলের সীম।
যাকে ধরে বিভিন্ন পেস বলাররা বল করে থাকেন এছাড়াও স্পিনাররা তাদের বল গুলোকে টার্ন করেন।
হতে পারে সেটি ইন সুইং কিংবা আউট সুইং।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন বলের সিম একটি পারফেক্ট বল তৈরির জন্য কতটা জরুরী।
বলে রাখা ভাল ক্রিকেট বলের সকল ধরনের সেলাইয়ের কাজগুলো এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পুরোপুরি ভাবে এখন পর্যন্ত হাতেই সমাপ্ত করা হয়।
আরো পড়ুন –
ক্রিকেট খেলার ইতিহাস – যেভাবে আবির্ভাব হয়েছিল ক্রিকেট
ফ্যাক্টরিতে যেভাবে টমেটো ক্যাচাপ তৈরি করা হয়
দক্ষ কিছু কারিগর দারা এই ধাপটি শেষ করা হয়। যা হয়তো আপনার চোখে মনে হতেই পারে। এটি মেশিনের মাধ্যমে তৈরি।
সেলাই শেষ হলে, ক্রিকেট বলকে হাইড্রোলিগ চাপ প্রয়োগ করে পারফেক্ট সাইজে আনা হয়।
সর্বশেষ আরো যে কাজগুলো করা হয় সেগুলো হচ্ছে-
কিছুটা আগুনের তাপে বলটিকে ধরে এর চামড়াগুলোকে আরো মজবুত করা।
এর উপরে খানিকটা রং মিশিয়ে , একে শেষ বারের মত পোলেশিং করে নেয়া।
এবং ক্রিকেট বলের উপরে সেই বল নির্মাণকারী কোম্পানির নাম যুক্ত করা।
I am forever thought about this, thanks for putting up.