ফ্যাক্টরিতে যেভাবে টমেটো ক্যাচাপ তৈরি করা হয়

ফ্যাক্টরিতে যেভাবে টমেটো ক্যাচাপ তৈরি করা হয়
টমেটো ক্যাচাপ তৈরি

যেকোন নাস্তায় বা ফ্রাই খাবারে টমেটো সস্ কিংবা ক্যাচাপ ছাড়া মনে হয় সেই খাবারটি যেন অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। টমেটো ক্যাচাপ বা সস্ সকল ধরনের খাবারের মধ্যে এর স্বাদ আরো দ্বিগুণভাবে বাড়িয়ে দেয়। 

আজ আমরা জানবো ফ্যাক্টরিতে ঠিক কীভাবে টমেটো ক্যাচাপ তৈরি করা হয় এছাড়াও এর ইতিহাস নিয়ে।

টমেটো ক্যাচাপ তৈরির ইতিহাস – 

জানা যায় খ্রীষ্টপূর্ব ৩ শতকের দিকে চীনে প্রথমবারের মত ক্যাচাপের সন্ধান পাওয়া যায়।

সে সময়ে তারা নদীর বিভিন্ন মাছ ফিসে তার সাথে মসলা যুক্ত করে একটি ভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করতেন। যার নাম ছিল ফিশ ক্যাচাপ।

১৭০০ সালের দিকে একজন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী চীনের এই অঞ্চলগুলোতে ঘুরতে আসেন। যেখানে তিনি সেই ফিশ ক্যাচাপের সাথে পরিচিত হন।

এরপর তিনি তার নিজ দেশে ফিরে গিয়ে সেখানে শষা, গাজর, টমেটো সহ আরো অন্যান্য কিছু সবজীর ক্যাচাপ তৈরি করা শুরু করেন।

আর ঠিক তখন থেকেই টমেটো ক্যাচাপের যাত্রা শুরু হয়।

১৮৭৬ সালে হেনরি জে হাইঞ্জ বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরি নিয়ে আধুনিক ক্যাচাপ তৈরি করা শুরু করে, এরপর হান্টস কোম্পানিও তাদের টমেটো ক্যাচাপ বাজারে নিয়ে আসে।

১৯২১ সালে প্রথম ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট হোয়াইট ক্যাসল চালু করা হয়।  যেখানে তারা সেই সকল ফাস্টফুডের সাথে টমেটো ক্যাচপ সরবরাহ করা শুরু করেন।

আর সর্বশেষ ১৯৫০ সাল থেকে ম্যাকডোনালস, বার্গার কিং এছাড়াও ইন এন্ড আউট সহ বেশ কিছু ফাস্টফুড তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান তাদের খাবারের সাথে টমেটো ক্যাচাপ বিক্রি করতে থাকে।

তখন থেকেই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, হটডগ, পিৎজা সহ সকল ধরনের খাবারে টমেটো ক্যাচাপ মিশিয়ে খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়।

এছাড়াও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় কোম্পানিগুলো টমেটো ক্যাচাপের বিভিন্ন ধরনের ফ্লেবারও তৈরি করা শুরু করে।

আরো পড়ুন - 
সহজে টমেটো ক্যাচাপ এবং টমেটো সস্ তৈরি পদ্ধতি
টমেটো সস্ এবং টমেটো ক্যাচাপের মধ্যে পার্থক্য
হাইঞ্জ টমেতো ক্যাচাপের বোতলে থাকা ৫৭ নাম্বারের রহস্য

১৯ শতকের শেষের দিকে ইউরোপ আমেরিকার বাজারে বেশ কয়েকটি টমেটো ক্যাচাপ কোম্পানি থাকলেও ঐ  সময়ে হাইঞ্জ টমেটো ক্যাচাপ সকলের কাছে জনপ্রিয় হতে শুরু করে।

যা কিনা বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষের কাছেই প্রধান পছন্দ।

ফ্যাক্টরিতে টমেটো ক্যাচাপ তৈরি – 

টমেটো ক্যাচাপ তৈরির জন্য প্রথমেই জমি থেকে সেই টমেটো গুলো সংগ্রহ করতে হয়।

এ ক্ষেত্রে যদি জমিগুলো ছোট হয়ে থাকে, তাহলে সেখান থেকে মানুষ হাতে হাতে সেই টমেটোগুলো তুলে ফেলে।

নতুবা টমেটোর পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে সেখানে বিশাল আকারের আধুনিক মেশিন দিয়ে টমেটোগুলো সংগ্রহ করা হয়।

টমেটো সংগ্রহ শেষে সেগুলো একটি স্থানে এনে একত্রিত করা হয়। এবং সেখানে থেকে ঐ সকল টমেটোগুলো থেকে তাজা টমেটোগুলো বাছাই করে সেগুলো পানি দিয়ে ভাল ভাবে ধুয়ে নেয়া হয়।

ধোয়া শেষ হলে আবারো সেই টমেটোগুলো বেশ কিছু দক্ষ লোক দ্বারা বাছাই করে নেয়া হয়।

এ পর্যায় যদি সেখানে নষ্ট কিংবা কাঁচা টমেটো থাকে তাহলে সেখান থেকে সেগুলো বাছাই করে তুলে নেয়া হয়।

আর এরপরেই শুরু হয় টমেটো ক্যাচাপ তৈরি করার আসল কাজ।

পরিস্কার টমেটোগুলো বাছাই শেষে তাতে চাপ ও তাপ এবং হালকা পানি মিশিয়ে সেগুলোকে একেবারে তরলে পরিণত করা হয়।

যাকে বলা হয় টমেটো পিউরি।

এক্ষেত্রে বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা সরাসরি এই সকল টমেটো পিউরিকেই বিভিন্ন টিনের ক্যানে ভরে বাজারজাত করে থাকে।

অথবা বিশাল আকারের জারে ভর্তি করে অন্যান্য কোম্পানির টমেটো সস্ কিংবা ক্যাচাপ তৈরির জন্য তাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

তবে বিশ্বের বড় ধরনের সকল কোম্পানিগুলোর  পরবর্তিতে

সেই সকল টমেটো পিউরির সাথে বেশ কিছু ক্যামিকেল যুক্ত করে।

ফ্যাক্টরিতে যেভাবে টমেটো ক্যাচাপ তৈরি করা হয়

যেমন-চিনি, মরিচের গুঁড়া, স্বাদমত লবণ, সাদা ভিনেগার, কর্নফ্লাওয়ার, তেল, ইত্যাদি।

তবে মজার বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হাইঞ্জ কোম্পানি তাদের ক্যাচাপ তৈরির জন্য সেখানে আরো কিছু পদার্থ যুক্ত করেন, যাকে তারা একটি সিক্রেট মিশন বলে গণ্য করেন।

এবার  বেশ কিছু সময় যাবৎ বড় একটি পাত্রে এগুলো কে ভালভাবে মিশিয়ে তা থেকে সামান্য অংশ টমেটো ক্যাচাপ ল্যাবে পরীক্ষা করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

যেখানে মিক্স টমেটো পিউরির ভেতরে থাকা এসিডিটি, লবণের পরিমাণ এছাড়া আরো বেশ কিছু জিনিসের পরীক্ষা করা হয়।

পরীক্ষা শেষে এই সকল ক্যাচাপ গুলোকে স্কেলের সাহায্যে এর ঘণত্ব পর্যবেক্ষণ করে নেয়া হয়।

এর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে ক্যাচাপ নিয়ে একটি স্কেলের ভেতরে ঢেলে দেয়া হয়

যদি সেই ক্যাচাপ গুলো ১০ সেকেন্ডে ১০ সেন্টি মিটার অতিক্রম করে তাহলে সেগুলোকে পারফেক্ট হিসেবে গণ্য করা হয়।

এরপরে সেই ক্যাচাপ গুলোকে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের নিজস্ব কোম্পানির বোটলে ভরে বাজারজাত করে থাকে।

curious

শেয়ার করুন -

১ মন্তব্য

  1. The next time I read a weblog, I hope that it doesnt disappoint me as much as this one. I imply, I do know it was my option to learn, but I truly thought youd have one thing fascinating to say. All I hear is a bunch of whining about something that you could possibly repair if you happen to werent too busy on the lookout for attention.

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন