মেঘের ওজন কি সত্যিই রয়েছে?

তো যাইহোক না কেন, এ থেকে বেশ সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে সত্যি সত্যিই মেঘের ওজন রয়েছে। 
তো যাইহোক না কেন, এ থেকে বেশ সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে সত্যি সত্যিই মেঘের ওজন রয়েছে। 

হিলিয়াম ভর্তি বেলুনের মতোই বাতাসে ভেসে বেড়ায় মেঘমালা। সুতা বাঁধার সুবিধা থাকলে হয়তো খেলনা হিসেবে দিয়ে দেওয়া যেত শিশুদের মন খুশি রাখতে। কিন্তু তাই বলে এটা ভাবার কোন সুযোগ নেই যে, মেঘের ওজন নেই।

মেঘের ওজন কত তা জানতে হলে প্রথমেই এর ঘনত্ব সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

সাধারণত আমরা তুলার মতো যে সাদা সাদা মেঘ দেখি, এর নাম আসলে কিউম্যুলাস মেঘ। যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় পুঞ্জমেঘ।

গবেষকদের মতামত, প্রতি ঘনমিটার কিউম্যুলাস মেঘে বিদ্যমান পানির ঘনত্ব ৫০০ মিলিগ্রাম।

তবে মেঘের ধরনভেদে, এ পানির ঘনত্বে ভিন্নতা দেখা দিতে পারে।

এবার জানা দরকার মেঘের আকার কেমন।

সূর্য যখন মেঘের ঠিক ওপরে থাকে, তখন ছায়া দেখে, পর্যবেক্ষণ করে এর আকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। গাড়ি চালিয়ে গেলে ওডোমিটারে অতিক্রান্ত দূরত্ব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

কিউম্যুলাস মেঘের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দুরত্ব সচরাচর ১ কিলোমিটার হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফেরিক রিসার্চ এর গবেষক মার্গারেট লেমোন।

মেন্টাল ফ্লস ডটকমকে বলেন, এরকম মেঘের উচ্চতাও প্রায় ১ কিলোমিটার বা তার কাছাকাছি হয়ে থাকে।

সে হিসাবে যদি ধরে নিই কিউম্যুলাস মেঘের আয়তন ১০০ কোটি ঘনমিটার।

আরো পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে ফেব্রুয়ারিতে; ৪-তারিখের মধ্যে প্রস্তুতির নির্দেশ দুধ অথবা সবজি ওটস- সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কোনটি?

আর অলিম্পিক গেমসের সুইমিংপুলগুলো যদি আড়াই হাজার ঘনমিটারের হয়ে থাকে তবে কিউম্যুলাস মেঘের আয়তন ৪ লাখ সুইমিংপুলের সমান।

এবার সংখ্যা দুটো গুণ করলেই বের হবে মেঘের ওজন।

উত্তর ৫ লাখ কেজি। আর পাউন্ডের হিসাব করলে ১১ লাখ পাউন্ড।

তুলনা করলে বলা যেতে পারে, ১০০টি হাতির মোট ওজনের সমান।

এখন মনে করুন, এই পরিমাণ হাতি আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে… নাহ্, কল্পনা করা সম্ভব নয়। আবার অসম্ভব কিছুও নয়।

মেঘ নিয়ে কত কবি লেখক কত কবিতা লিখেছে, কত গল্প আছে পুরানো দিনের।

জীবনানন্দ দাশের কবিতায় কবির কল্পনায় এসেছে মেঘ পাহাড়ের মতো—‘পাহাড়ের মতো ওই মেঘ/সঙ্গে ল’য়ে আসে/মাঝরাতে কিংবা শেষরাতের আকাশে’।

এখন প্রশ্ন হলো, পাহাড়ের মতো ওজন এই মেঘের কিন্তু আকাশে ভেসে থাকে কীভাবে?

এর প্রকৃত কারণ হলো, মেঘের ওজন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির কণায় বিভক্ত। তবে সেই পানির কণা গুলির বিস্তৃতি বিশাল ক্ষেত্রজুড়ে।

পানি কণাগুলো এতটাই ক্ষুদ্র যে কয়েক লাখ অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোটি কোটি কণা একত্রে জুড়লে তবেই এক ফোঁটা বৃষ্টি হবে।

আর এই কণার আকার ছোট বলেই তাদের মাধ্যাকর্ষণ অতি নগণ্য।

তো যাইহোক, এ থেকে বেশ সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে সত্যি সত্যিই মেঘের ওজন রয়েছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, শুষ্ক বাতাসের থেকেও মেঘের ঘনত্ব খুবই কম।

তাই ওপরের উষ্ণ বাতা মাঝেমধ্যে এই খুদে পানির কণাগুলি টেনে ওপরে তোলে।

আর মেঘের মধ্যবর্তী পানির এই ক্ষুদ্র কণাগুলো কিন্তু আজীবন আকাশে ভেসে থাকে না।

মেঘের মধ্যে পানির ঘনত্ব বাড়ার সাথে সাথে কণাগুলোর আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে, যার ফলে এদের ওজনও বাড়তে থাকে। সবশেষে এগুলো মাটিতে ঝরে পড়ে বৃষ্টি হয়ে।

curious

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন