দিনপঞ্জিকার বিবর্তন – যেভাবে এল আজকের এই ক্যালেন্ডার!

দিনপঞ্জিকার বিবর্তন; কিভাবে এল আজকের ক্যালেন্ডার
দিনপঞ্জিকার বিবর্তন; কিভাবে এল আজকের ক্যালেন্ডার

আমাদের প্রত্যেকেরই দিন শুরু হয় দিনপঞ্জিকা দেখে। যাকে ইংরেজিতে বলে ক্যালেন্ডার দিয়ে। কিন্তু এই ক্যালেন্ডার কি একদিনেই আমাদের সামনে এসেছে? না, কালে কালে দিনপঞ্জিকার বিবর্তন এর ফলে আজকের ক্যালেন্ডার।

আমরা নতুন বছর শুরু করি নতুন দিনপঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার দিয়ে।

আজকাল অফিস, বাসগৃহের দেয়াল কিংবা টেবিলে শোভা পায় বিভিন্ন রকমের মনোহারি ক্যালেন্ডার।

কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি ক্যালেন্ডার যখন ছিল না তখন মানুষ সঠিকভাবে সময় কিভাবে নির্ণয় করা হত?

বাস্তবেই তখন সময় নির্ধারণ করা ছিল খুব দুরূহ একটি ব্যাপার!

মজার ব্যাপার হল তখন গতানুগতিক আধুনিক সব ক্যালেন্ডার না থাকলেও মানুষ দিন-মাসের হিসেব ঠিক-ই হিসাব করতে পারত। কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব?

চলুন জেনে আসি প্রচলিত ক্যালেন্ডার সৃষ্টির আগের ইতিহাস।

ইতিহাস ঘাটলে অনেক ধরনের দিনপঞ্জিকার বিবর্তন সম্পর্কে আমরা জানতে পারব।

সঠিক সময় নির্ণয়ের জন্য অতীত থেকেই একেক সময় একেক পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। দিনপঞ্জিকার বিবর্তন করে করে এখন মানুষ সঠিক সময়ের সন্ধান পেয়েছে।

জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে মিশরীয় বিভিন্ন জ্যোতির্বিদরা একত্রে একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে দিবসকে ১২ ঘণ্টা এবং রাত্রিকে ১২ ঘণ্টা হিসেবে ভাগ করে ২৪ ঘণ্টায় পুরো ১টি দিন ধার্য করেন।

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো পানির সাহায্যে এক বিশেষ ধরণের ঘড়ি তৈরি করেছিলেন। যা দেখে সময় নির্বাচন করে তিনি তাঁর আশ্রমের ছাত্রদের অধ্যয়নের নির্দেশ দিতেন।

রোমান সিনেটররাও বক্তৃতা দেওয়ার সময় তাদের বক্তৃতার ব্যাপ্তি সঠিক রাখার জন্য পানির ঘড়ি ব্যবহার করতেন।

তবে সর্বপ্রথম যে ক্যালেন্ডারের কথা জানা যায় তাঁর ভিত্তি ছিল চাঁদ।

তার কারণ গ্রহ-নক্ষত্র ছাড়া চাঁদের কলার হ্রাস-বৃদ্ধির মতো এত বড় ঘটনা মানুষের নজর কখনই এড়াতে পারেনি।

এছাড়া ঋতু পরিবর্তন এবং পুণঃরায় আবর্তন এর তুলনায় চাঁদের পরিবর্তনের সময় অপেক্ষাকৃত কম ।

তখন ১৯৬৫ সাল। ফ্রান্সে মিলল প্রায় ৩০ হাজার বছরের পুরনো এক হাড়ের টুকরা । তার এক পাশে ছিল ৬৯ টি আলাদা আলাদ দাগ।

সেসময় অনেকেই ধারণা করছিলেন দাগগুলো নেহাতই শিকারের হিসেব।

কিন্ত তা মানতে নারাজ একজন ব্যক্তি, নাম তাঁর আলেকজান্ডার মাশরাক।

তিনি গবেষণায় নেমে পরলেন। মাইক্রোস্কোপের নিচে দাগগুলোকে কয়েক ভাগে ভাগ করলেন এবং এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে ওগুলো চাঁদের দশা পরিবর্তনের নমুনা।

এই ঘটনা প্রথম না। আফ্রিকায় সন্ধান মেলেছিল একইরকম আরও একটি হাড়, যেটি ৮৫০০ বছরের পুরানো ।

কিন্তু এতে দাগ ছিল ১৬৮ টি। মাশরাক আবিষ্কার করে দেখান যে, দাগগুলো সাড়ে ৫ মাসে নতুন এবং পূর্ণ চাঁদের সঙ্গে খাপ খায়।

এথেকে উনি এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, এগুলো দিন গণনা ছাড়া আর কিছুই নয় ।

রোমান ক্যালেন্ডার:

রোম বিশ্বের সবচাইতে সমৃদ্ধ প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

খ্রিষ্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীর প্রথম দিকে ইতালীয় উপদ্বীপে এই সভ্যতার আবির্ভাব হয়।

প্রাচীন রোমে মাসের প্রথম দিনটি “ক্যালেন্ডি ” (kalendae) নামে প্রচলিত ছিল। ক্যালেন্ডি শব্দটির ল্যাটিন রূপ ক্যালেন্ড্রিয়াম,যার অর্থ হলো হিসাব খাতা।

পরবর্তীতে জানা যায়, এই ক্যালেন্ডি শব্দ থেকেই ইংরেজি ক্যালেন্ডার শব্দের উৎপত্তি হয়।

অনেকের ধারণা অনুসারে রোমানরাই পৃথিবীতে প্রথম ক্যালেন্ডার তৈরির দাবিদার।

পণ্ডিত পণ্ডিফোরাই ৭৫৬ অব্দে এটি প্রথম উপলব্ধি করেন। চাষাবাদের নির্ঘন্টের ওপর ‍নির্ভর করে এ ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করা হয়, একারণে এর মাসের সংখ্যা ছিল ১০।

প্রবল শীতের প্রকোপের সময় ইউরোপে চাষাবাদ বন্ধ থাকতো। তাই শীতের এই দু’মাস সেই ক্যালেন্ডারে ছিল না।

সেই ক্যালেন্ডার অনুসারে শুক্লপক্ষের প্রথম চাঁদ দেখা দিলেই প্রথম মাস গণনা শুরু করা হতো।

১০ মাসের সেই ক্যালেন্ডারে দিনের সংখ্যা ছিল ৩০৪ দিন। এবং বছরের গণনা শুরু হতো মার্চ মাস হতে।

৩০ দিন বিশিষ্ট ৬ মাস ও ৩১ দিন বিশিষ্ট ৪ মাস এর সমন্বয়ে সর্বমোট ৩০৪ দিন ছিল ১ বছরে।

১০ম মাস ছিল ডিসেম্বর এবং এরপরেই ছিল শীতের বিরতি।

মজার ব্যাপার হল এ বিরতির সময়কালে আর দিন গণনা হত না!

এরপর ২য় রোমান রাজা নিউ পম্পিলাসের রাজত্বকালে দিনপঞ্জিকার বিবর্তন আরও হতে থাকে। তিনি বছরের শূন্যস্থান পূরণ করার উদ্দেশ্যে সেই ক্যালেন্ডারে অতিরিক্ত আরও ৫০ দিন যোগ করা হল।

পুরো বছরকে সমণ্বয় করতে এবং জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ভাগ করার জন্য এর ৬টি ৩০ দিনের মাস থেকে ৬ দিন ধার নিয়ে ৫৬ দিনকে দুই মাসের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হল।

এর ফলে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারির এ দুই মাসের দিন সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮।

এদিকে ঘটলো আরেক বিপত্তি, রোমে সেই জোড় সংখ্যা নিয়ে সে কি উপহাস! তা এড়াতে জানুয়ারি মাস থেকে ১ দিন কমিয়ে বছর কে ৩৫৫ দিনের করা হয়।

এরপর দিনপঞ্জিকার বিবর্তন ঘটাতে আসলো পঞ্চম রাজা টারকুইনাস এর পালা। তিনি জানুয়ারি মাসকে প্রথম মাস এবং মারসিডোনিয়াস নামের একটি অধিমাস যুক্ত করে নতুন পদ্ধতিতে বছর গণনা চালু করেন।

প্রতি ২ বছর অন্তর ২৩শে ও ২৪শে ফেব্রুয়ারির মাঝে ২৭/২৮ দিনের এই অধিমাস টি যুক্ত করা হয়।

একারণে ২ বছর পর পর এই মাসটি ২২/২৩  দিনের একটি মাসে পরিণত হতে শুরু করলো।

এভাবেই ৪ বছরে দিনের সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় (৪*৩৫৫)+২২+২৩ =১৪৬৫ টি।

আর এতে প্রতি বছর শেষে মোট দিন সংখ্যা হয় গড়ে ৩৬৬.২৫ টি।

মূলত ‘লিপইয়ার’-এর প্রচলন আরম্ভ হয় রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের শাসনামল হতে।

জুলিয়াস সিজার সুদূর আলেকজান্দ্রিয়া থেকে গ্রীক জ্যোতির্বিদ মোসাজিনিসকে (মতান্তরে নামটি সসিজেনিস) খুঁজে নিয়ে আসেন ক্যালেন্ডার সংস্করণের উদ্দেশ্যে।

জ্যোতির্বিদ মোসাজিনিস লক্ষ্য করেন পৃথিবী সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষীণ করতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা।

সুতরাং, ৩৬৫ দিনে যদি বছর হিসাব করা হয় এবং প্রতি চতুর্থ বছরে ৩৬৬ দিনে বছর হিসাব করতে পারলে মাসে দিনের সংখ্যা হিসাবে আর কোনো গড়মিল থাকে না।

যেই ভাবা সেই কাজ, মোসাজিনিস অতিরিক্ত একদিন যুক্ত করে দেন। এবং সে বছরটির নাম দিলেন ‘লিপইয়ার’ এবং সংশোধিত এই ক্যালেন্ডারের নতুন নাম নির্ধারণ করেন ‘জুলিয়াস ক্যালেন্ড’যা দীর্ঘ সময় প্রচলণ ছিল।

তবে জ্যোতির্বিদ মোসাজিনিসের সমাধানটি সহজ হলেও তা সঠিক ছিলো না, কারণটা পরিষ্কার।

পৃথিবীর সূর্যের ৪ দিকে ১ বার ঘুরে আসতে গড়ে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড সময় লাগে।

একারণে মূল সৌর বছরের সঙ্গে জুলিয়ান বছরের ফারাক প্রায় ১১ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের!

আরও দেখা যায় পৃথিবীর আবর্তনের উপর নির্ভর করে ২০-২২ জুনের মধ্যে কোন এক তারিখে উত্তর গোলার্ধে সবথেকে বড় দিন (দক্ষিণ গোলার্ধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ছোট) এবং ২১-২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে কোন একটা তারিখ সবথেকে ছোট দিন (দক্ষিণ গোলার্ধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে লম্বা)।

এবং এ সৌর ঘটনাগুলো সবসময়ের জন্যই সুনির্দিষ্ট।

এ কারণেই জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে লিপইয়ার থাকা সত্ত্বেও দিনের হিসাব গড়মিল হয়ে এলোমেলো হয়ে যেত।

যদিও এই ভুল জুলিয়ান ক্যালেন্ডার প্রসারে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি।

তাই বছর গণনার মানসম্মত ব্যবস্থা হিসাবে ব্যপক পরিচিত হয়ে যায় এটি।

বর্তমান ক্যালেন্ডার:-

ষোড়শ শতাব্দীতে এসে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরির উদ্যোগে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে।

তবে দিনপঞ্জিকার বিবর্তন করে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের ভুল সংশোধন করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। মূলত এর কারণটা ছিল ধর্মীয়!

পূর্বের ক্যালেন্ডার অনুসারে ইস্টার সঠিক সময়ে পালন করা সম্ভপর ছিল না।

আরো পড়ুন:
জাপানের বিখ্যাত খেলা-সুমো কুস্তি
ইবনে সিনা - মধ্যযুগের জ্ঞানসাধনার শ্রেষ্ঠ নক্ষত্র
সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্থান পতন

চরম এই ব্যাপারটা তৎকালীন ক্যাথলিক চার্চকে ভাবিয়ে তোলে। তাই ক্রিস্টোফার ক্ল্যাভিয়াস নামক এক জ্যোতির্বিদকে সেই সমস্যা সমাধান করার দায়িত্ব দেন পোপ গ্রেগরি।

পরবর্তীতে  জার্মান গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টোফার ক্ল্যভিয়াস লিপইয়ারের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবনা পেশ করে।

ক্ল্যাভিয়াসের প্রস্তাবনা অনুযায়ী লিপ ইয়ারের জন্য যে ৩ টি শর্ত যোগ করা হয় তা হল:-

– ১ টি বছরকে ৪ দিয়ে ভাগ করা যাবে।
– শতাব্দীর (যেমনঃ ২০০০, ১৯০০) বেলায় বছরটিকে কেবল ১০০ দিয়ে ভাগ করা গেলেই হবে না যেটি জুলিয়ানের তৈরি ক্যালেন্ডারে যেটি স্বাভাবিক ছিলো। বরং, একে ৪০০ দিয়েও ভাগ করা সম্ভব হবে।

১৫৮২ সাল থেকে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরির নির্দেশনা অনুসারে তৈরিকৃত নতুন ক্যালেন্ডারটি কার্যকর হয়।

ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ ইউরোপ মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এ ব্যবস্থা।

বিংশ শতাব্দীর ভেতর সারা বিশ্বে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ব্যবহার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।

বর্তমানে আমরা যে ইংরেজি বর্ষ পালন করি তা হচ্ছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে। ক্রমে দিনপঞ্জিকার বিবর্তন হতে হতে আজ এই অবস্থায় দাড়িয়েছে।

এবার দেখে আসি কিভাবে এলো এই ইংরেজি মাসগুলির নাম—

জানুয়ারিঃ 

রোমে ‘জানুস’ নামে এক দেবতা ছিল। রোমবাসী তাঁকে যেকোন কিছু সূচনার দেবতা বলে মানতো। তাই তাঁর নামানুসারে বছর সূচনার মাসের নাম হয় জানুয়ারি।

ফেব্রুয়ারিঃ

যিশুখ্রিস্টের জন্মের ৪৫০ বছর পূর্বে থেকে ২য় মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারির  প্রচলন ছিল।

সেকালে রোমানরা ‘ফেব্রুয়া’ নামক চিত্তশুদ্ধির এক উৎসব পালন করতো। ‘ফেব্রুয়া’ অর্থ পবিত্র।

এ কারণে রোমানরা এই মাসটিকে পবিত্র মাস হিসেবে ধরে নেন।

মার্চঃ

রোমানদের যুদ্ধ দেবতার নাম ছিল ‘মারস’। তাঁর নামানুসারে তারা মার্চ মাসের নামকরণ করেছিলেন।

এপ্রিলঃ

ল্যাটিন শব্দ ‘এপিরিবি’ এর অর্থ খুলে দেওয়া। এই এপিরিবি থেকে এপ্রিল শব্দটি এসেছে।

মেঃ 

রোমানদের মতানুসারে দেবী ‘মেইয়ার’-এর নামানুসারে এ মাসটির নামকরণ হয় মে।

জুনঃ

রোমানদের নারী, চাঁদ এবং শিকারের দেবী হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন ‘জুনো’।

এবং তার নামেই জুন মাসের নামকরণ করেন তারা।

জুলাইঃ

জুলিয়াস সিজারের নামানুসারে জুলাই মাসটির নামাঙ্কিত হয়।

আগস্টঃ

জুলিয়াস সিজারের পরবর্তীতে রোমের সম্রাটের আসন আলো করেন তারই ভাইয়ের ছেলে অগাস্টাস সিজার।

তারই নামানুসারে এই মাসটির নাম দেওয়া হয় ‘আগস্ট’।

সেপ্টেম্বরঃ

সেপ্টেম্বর শব্দের শাব্দিক মানে হচ্ছে সপ্তম। কিন্তু সিজারের বর্ষ পরিবর্তনের পর তা হয়ে দাঁড়ায় ৯ম মাসে।

তবে প্রচলিত হয়ে যাওয়ায় এরপর এটা আর কেউ পরিবর্তন করেনি।

অক্টোবরঃ

‘অক্টোবর’ শব্দটির শাব্দিক অর্থ হচ্ছে অষ্টম। সেই মতে এটা ৮ম মাস হওয়ার কথা।

কিন্তু সেই অষ্টম মাস আমাদের ক্যালেন্ডারে বর্তমানে স্থান পেয়েছে ১০ম মাসে।

নভেম্বরঃ

‘নভেম’ শব্দের অর্থ ৯। এই অর্থানুযায়ী তখন নভেম্বর মাসটি ছিল বছরের নবম মাস।

জুলিয়াস সিজারের নতুন বর্ষপঞ্জির কারণে আজ নভেম্বরের স্থান এগারোতে।

ডিসেম্বরঃ

‘ডিসেম’ একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ দশম।

সিজারের বর্ষ পরিবর্তনের আগে অর্থানুযায়ী তখন এটি ছিল দশম মাস।

কিন্তু বর্তমানে দিনপঞ্জিকার বিবর্তন এর কারণে আমাদের ক্যালেন্ডারে এ মাসের অবস্থান একেবারে বছরের শেষপ্রান্তে।

অফ টপিকঃ

কোন নির্ণয়ই আসলে নির্ভুল নয় । অবশ্য গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নিয়ে আমাদের খুব একটা সমস্যা হয় না কিন্ত একটা ব্যাপার মনে রাখা দরকার।

এ ব্যবস্থাটিতেও ছোট একটা সমস্যা রয়েই গেছে।

গ্রেগরিয়ান বছর মূল সৌর বছরের থেকে প্রায় ২৬-২৭ সেকেন্ড দীর্ঘ।

অর্থ্যাৎ প্রতি ৩২৩৬ বছরে প্রায় ১ দিনের হিসাব ওলটপালট হয়ে যাবে এ ক্যালেন্ডার অনুসারে।

অবশ্য, এ ধারণা অনুযায়ী ৪৯০৯ সালের আগে আমরা  নিশ্চিন্ত থাকতে পারি!

সুতরাং পরিশেষে বলা যায়, দিনপঞ্জিকার বিবর্তন  হতে হতে যদিও আধুনিক ক্যালেন্ডার তৈরির পেছনে রোমানদের ভূমিকাই অধিক ধরা হয় তবে গ্রিক, মিসরীয়, ভারতীয়, চীনা, মুসলিম ক্যালেন্ডারের ভূমিকাও অতুলনীয় ।

curious

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন