এলিয়েন কি সত্যি রয়েছে? এ সম্পর্কে গাণিতিক ব্যাখ্যা

এলিয়েন কি সত্যি রয়েছে? এ সম্পর্কে গাণিতিক ব্যাখ্যা
এলিয়েন কি সত্যি রয়েছে? এ সম্পর্কে গাণিতিক ব্যাখ্যা

এলিয়েন কি সত্যি রয়েছে? এলিয়েন বলতে পৃথিবীর বাইরের ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীকে বুঝায়। তবে আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এই ভিনগ্রহের প্রাণীর প্রমাণ না পেলেও।

বিজ্ঞানীরা এমন কিছু তথ্য পেয়েছেন যার ফলে বলা যায় এই মহাবিশ্বে এলিয়েন অবশ্যই রয়েছে।

এলিয়েন নিয়ে গবেষণার ইতিহাস –

খ্রীষ্টপূর্ব পাঁচশতকে দার্শনিক থেলাস সর্বোপ্রথম ভিনগ্রহের প্রানীর বসবাস নিয়ে ধারণা পোষন করেন।

এছাড়াও সে সময়ে তিনি সহ আরো অনেক বিজ্ঞানী এ ব্যাপারে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন।

পরবর্তীতে মধ্যে যুগে এসে বিজ্ঞানীরা এবিষয়ে আরো তৎপর হতে থাকে।

সে সময়ে পৃথিবী থেকে ভিন গ্রহের প্রানীদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য রাতে বিশাল এলাকা জুড়ে আগুন জ্বালান বিজ্ঞানীরা। সূর্যের আলোকে কাচের মাধ্যমে প্রতিফলন করে পৃথিবীর বাইরে পাঠানোর মাধ্যমে সংকেত দেবার চিন্তা ছাড়াও আরো বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হয়ে পরেন।

সর্বোশেষ উনিশ শতকে আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার পরে সবাই আবারো এলিয়েনের বিষয়টিকে নিয়ে নেড়েচেরে বসেন। প্রায় সকল বিজ্ঞানী এ ব্যাপারে একমত পোষন করেন যে পৃথিবীর বাইরেও প্রাণীদের অস্তিত্ব রয়েছে।

এলিয়েনের অস্তিত্ব নিয়ে গাণিতিক ব্যাখ্যা –

আপনি হয়ত জেনে অবাক হবেন আমরা যখন খালি চোখে আকাশের দিকে তাকাই তখন আমরা একসাথে আড়াই হাজারের বেশি তারা দেখতে পাইনা। তবে অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে শুধুমাত্র আমাদের এই ছায়া পথেই রয়েছে ১০০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন নক্ষত্র।

অন্যদিকে সমগ্র মহাবিশ্বে রয়েছে প্রায় দুই হাজার বিলিয়ন ছায়াপথ। যার মানে দাঁড়ালো গোটা মহাবিশ্ব ব্যাপি মোট তাঁরা রয়েছে ১০*২৪ টেন টু দি পাওয়ার টুয়েন্টি ফোর।

বিষয়টিকে আরেকটু সহজ ভাষায় বললে আমাদের পৃথিবীতে যতগুলো বালু কণা রয়েছে তার প্রতিটি কণার বিপরীতে রয়েছে ১০ হাজার টি নক্ষত্র।

এ ক্ষেত্রে আমরা যেই সূর্যকে দেখতে পাই সেটিও এমন একটি তাঁরা। যাকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘুরছে আমাদের পৃথিবী সহ মোট আটটি গ্রহ। যাকে ঘিরেই আমাদের বিশ্বে প্রাণীদের অস্তিত্ব বেঁচে আছে।

আরো পড়ুন - 
 পবিত্র কুরাআনে আলোকে এলিয়েন নিয়ে কিছু কথা- 

গাণিতিক সম্ভাবনার বিচারে বিজ্ঞানীরা বলেন মহাবিশ্বে সূর্যের মত করে ৫ %-২০% তাঁরা রয়েছে।

যাদের আকৃতি, তাপমাত্রা এবং শক্তির বিচারে অনেকটাই সূর্য্যের সাথে মিল পাওয়া যায়।

যার মানে দাঁড়ালো আমাদের মহাবিশ্বে সূর্যের মত করেই প্রায় ৫০০ বিলিয়ন বিলিয়ন সূর্যের অনুরুপ নক্ষত্র রয়েছে।

অন্যদিকে প্রতিটি এই সকল সূর্যের চারপাশ জুড়ে আমাদের পৃথিবীর মত গ্রহ থাকার সম্ভাবনা ২২%।

অর্থাৎ মহা বিশ্বে পৃথিবীর মত আরো গ্রহ রয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন বিলিয়ন।

বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের পৃথিবীর সৃষ্টির পরবর্তী সময়ে এখানে প্রায় দীর্ঘ ১ বিলিয়ন বছর পরে মানুষের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই বলা যায় এই সকল গ্রহের মাঝে অন্তত ১% গ্রহতে হলেও প্রাণীর বিকাশ ঘটেছে।

আর আমরা যদি একে সংখ্যাতে প্রকাশ করি তাহলে তা দাঁড়াবে প্রায় ১০ মিলিয়ন।  বিজ্ঞানীরা দাবী করেন, হতে পারে সেই সকল গ্রহে মানুষের থেকেও কম বুদ্ধি সম্পূর্ন জীবের অস্তিত্ব রয়েছে। আবার এও হতে পারে সেখানে যেসকল প্রানীরা রয়েছে তারা হয়তো মানুষের মত এতটা চতুর নয়।

এছাড়াও সবচাইতে বড় একটি সমস্যা হচ্ছে মহাবিশ্বে প্রতিনিয়ন নতুন নতুন নক্ষত্র জন্ম নিচ্ছে আবার ধংশ হচ্ছে। তাই হয়তো এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, পৃথিবীর বাইরে এতো সংখ্যক প্রানীর অস্তিত্ব অবশ্যই নেই।

তবে সেখানে প্রাণীর জীবন ধারনের জন্য যেসকল গ্রহ এখন পর্যন্ত মজুদ রয়েছে সেগুল যে নেহাত কম নয় তা হয়তো আপনারা সবাই এখন বুঝতে পেরেছেন।

বর্তমানে পৃথিবীর বাইরে প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে পাবার জন্য বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে যার মধ্যে অন্য তম হচ্ছে ‘সেটি’ যার ফুল মিনিং হচ্ছে

Search for extraterrestrial intelligence

মূলত বেশ আগে থেকেই তাদের কার্যক্রম চালু থাকলেও ৯০ শতকের দিকে বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে আরো আগ্রহী হয়ে উঠেন।  সর্বোশেষ ২০১৫ সালে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং এবং রাশিয়ান সাইন্টিস্ট উরি মিলনার একত্রে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যয়ে একটি প্রজেক্ট হাতে নেয় যার নাম হচ্ছে Breakthrough Listen

এলিয়েন কি সত্যি রয়েছে? এ সম্পর্কে গাণিতিক ব্যাখ্যা
বিজ্ঞানী হকিং এবং উরি মিলনার

যা কিনা ভিন গ্রহের প্রাণীদের খুঁজতে ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা কাজ করে যাচ্ছে।  বর্তমানে সেটি এবং তাদের আরো অন্য অঙ্গ সংগঠন বিশ্বের প্রায় বিভিন্ন দেশে এই কাজ পরিচালনা করছে।

যাদের প্রধান কাজ হচ্ছে বেতার তরঙ্গের সাহায্যে ভিন গ্রহের প্রাণীকে খুজ বের করা।

 আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন বেশ কয়েক বছর পূর্বে টেলিস্কোপের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের কক্ষ পথে পৃথিবীর মত একটি গ্রহের সন্ধান পায়।

যার দূর্রত্ব পৃথিবী থেকে প্রায় ১২.৩৬ আলোক বর্ষ দূরে। আমাদের সৌর জগতের মত দেখতে ঐ গ্রহটির নাম GJ-273 B

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন সেই সৌর জগতকে ঘিরে থাকা গ্রহে প্রাণীর জীবন ধারনের সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।

যে করে সেই গ্রহের উদ্দেশ্যে তারা ইতিমধ্যে একটি সংকেতিক বার্তাও প্রেরন করেন। যদিও তা এখনো সেই গ্রহে গিয়ে পৌছায়নি।

অবশ্য মহাকাশে এলিয়েনদের জন্য বার্তা পাঠানো এটিই প্রথম নয়। সর্বোপ্রথম নাসার এর পক্ষ থেকে ১৯৭২ সালে মহাকাশে ভিন গ্রহের প্রাণীদের জন্য একটি বার্তা পাঠানো হয়েছিল, যেখানে মানুষের দৈহিক গঠন সহ আমরা কোথাই বাস করছি তার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়।

এর পরে একে একে এলিয়েনদের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা সাংকেতিক ভাষা সহ বিশ্বের প্রায় ৫৫ টি ভাষার সমষ্টি গত অডিও রেকর্ড তৈরি করে হয়। যেখানো আরো রাখা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নানা ধরনের শব্দ এবং কিছু গানিতিক ট্রামস।

যার পাশাপাশি এর সাথে যুক্ত করা হয় আমাদের পৃথিবীর দৈনন্দিন জীবনের ১১৬ টি স্টিল পিকচার।

বর্তমানে এই তথ্য গুল মহাকাশ থেকে সেটেলাইটের সাহায্যে বিভিন্ন গ্রহকে উদ্দেশ্যে করে পাঠানো হচ্ছে ।

যার ফলাফলে বিজ্ঞানীরা কিছু সিগন্যাল পেয়েছেন বলেও দাবি করেন।

নাসার বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২৩৪ সিগন্যাল পৃথিবীর বাইরে অর্থ্যাৎ ভিন গ্রহ থেকে আমাদের পৃথিবীতে এসেছে। যার মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় এবং আলোচিত সিগনালটি ছিল ১৯৭৭ সালে পাওয়া ওয়াও সিগনাল।

যেখানে এক নাগারে রেডিও সিগনালের মাধ্যমে কম্পিউটারে লিপিবদ্ধ হওয়া সংখ্যার পরিবর্তে পাওয়া গিয়েছিল কিছু ইংরেজি আলফাবেটকে যা ছিল 6equj5

বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন হয়তো আর মাত্র ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই এলিয়েন নিয়ে আমরা আরো চাঞ্চল্য কর তথ্য কিংবা তাদের সন্ধান পাব।

curious

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন