অনিশ্চিয়তায় আন্তর্জাতিক বৃত্তি প্রাপ্ত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা

অনিশ্চিয়তায় আন্তর্জাতিক বৃত্তি প্রাপ্ত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা
অনিশ্চিয়তায় আন্তর্জাতিক বৃত্তি প্রাপ্ত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা

মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে অনিশ্চিয়তায় পরে গেছে আন্তর্জাতিক বৃত্তি প্রাপ্ত হাজারো বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ।     এছাড়াও অনেকে হারাতে পারেন স্কলারশিপে পাওয়া গবেষনার সুযোগও।

বিশ্বজুড়ে করোনার প্রাদুর্ভাবে অনেক দেশই তাদের আন্তজার্তিক শিক্ষাথীদের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে এতে করে চালু হয়েছে অনলাইন ক্লাস ও এক্সামের সুযোগ তবে এতে করে বেড়ে যাচ্ছে টিউশন ফি ও আনুসাঙ্গিক খরচও ।

অনেক ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাসের জন্যেও দিতে হচ্ছে এক হাজার ডলারের টিউশন ফি।কোন প্রকার ছাড় ছাড়াই অনলাইনে টিউশন ফি দিতে হচ্ছে। এতে করে শিক্ষাথীদের পড়তে হচ্ছে আর্থিক সমস্যায়।

বাংলাদেশে অবস্থিত অনেক দেশের দূতাবাস এবং কনস্যুলেটরা সীমিত আকারে ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা গ্রহণ করছেন না এতে করে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আশঙ্কা করছেন যে, তারা বৃত্তির সুযোগ হারাতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের ভর্তিও বাতিল হয়ে যেতে পারে।

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বিষয়ক সুবিধা প্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করে তাদের গন্তব্যের তালিকা তৈরি করা হয়। যেমন, মালয়েশিয়া,যুক্তরাষ্ট্র,কানাডা বিভিন্ন দেশে তারা পছন্দ করে সে অনুযায়ী আবেদন করে পরে নির্ধারিত নিয়মের মধ্যে দিয়ে তারা সে দেশগুলোতে যেতে পারবে।

দিন দিন উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে বিশ্ব জুড়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রসার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউনেস্কোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশ থেকে মাত্র সাত হাজার ৯০০ জন শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

যে সংখ্যাটি গত ১৭ বছরের ব্যবধানে ৬০ হাজার হয়েছে। ‘গ্লোবাল ফ্লো অব টারশিয়ারি লেভেল স্টুডেন্টস’ শিরোনামে ইউনেস্কোর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৭-১৮ সালে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে গেছেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে দেশের অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি এবং বৃত্তির প্রস্তাব পেয়েও ভর্তি হতে পারছে না।

অথচ এর জন্য তারা কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং অনেকে লক্ষাধিক টাকাও খরচ করেছেন। দুটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের জন্য বৃত্তির আমন্ত্রণ পাওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক মো. আকিবুর রহমান বলেন, ‘আমি ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য ভর্তি হতে চাই।

গত ১৯ জুন আমার তত্ত্বাবধায়ক আমাকে জানিয়েছেন এই সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করতে না পারি, তাহলে আমার বৃত্তি বাতিল হয়ে যাবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তহবিল সংকটের কারণে তারা এই বৃত্তিটি পিছিয়ে দিতে পারবে না।

এটা জানার পর, আমি যখন বাকি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার ভর্তির ব্যাপারে যোগাযোগ করি, তারা জানায় যে ইতোমধ্যে তাদের আসনগুলো পূরণ হয়ে গেছে।

দূতাবাস এখনো ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া শুরু করেনি। যার কারণে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমি আর দেখতে পাচ্ছি না। তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও আমি কোথাও ভর্তি হতে পারছি না।

ফরেন অ্যাডমিশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কনসালট্যান্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এফএসিডি-সিএবি) তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে দেশের ভর্তি পরামর্শদাতারা এক লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে এ বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গত বছর কমপক্ষে ৭০ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়েছে।

২০২০ সালের প্রথম আট মাসে তারা মাত্র তিন হাজার শিক্ষার্থীকে এই সেবা দিয়েছেন। আর এর বেশির ভাগই হয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।

এফএসিডি-সিএবির সভাপতি কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী বলেন, ‘আমরা এক অভূতপূর্ব সংকটে আটকা পড়েছি। আমরা শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার চেষ্টা করছি। তবে দেশগুলো যদি ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট না দেয় তাহলে আর আমরা কী করতে পারি। এটা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

curious

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন