মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে অনিশ্চয়তায় প্রবাসীদের জীবন ও জীবিকা। এমহামারীতে প্রায় লাখ খানেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছে। দেশগুলো তাদের ব্যয় সংকোচনের জন্য কর্মচুত্য করছে অনেক কর্মীকে এতে কর্মহীন হয়ে আটকে পড়েছে লাখো প্রবাসী বাংলাদেশি।
এদিকে করোনায় লকডাউনে দেশে আটকে পড়া প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের কাজ ফিরে পাবে কিনা এ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এখন এই অভিবাসী শ্রমিকদের দেশে ফেরত আসা ঠেকাতে সরকারকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুইভাবেই সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে দুই লাখ অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। এছাড়া ২১শে মার্চ আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হওয়ার পর এ পর্যন্ত চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন আরও অন্তত ১৮ হাজার শ্রমিক।
সম্প্রতি সৌদি আরব, কাতার, কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে জানানো হয় যে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক চাকরি হারাতে পারেন। এমহামারির কারণে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে গত তিন মাসে অন্তত এক লাখের বেশি মানুষের যাওয়া আটকে গেছে।
মনে করা হচ্ছে সামনের সময়গুলোতে অভিবাসীদের দেশে ফেরত আসার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে এতে করে বিরুপ প্রভাব পরবে দেশের রেমিট্যান্স আয়ের উপর।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় করনীয় হিসেবে অভিবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দুটি উপায়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন প্রবাসীদের বেসরকারি সংস্থা রামুরুর চেয়ারম্যান তাসনিম সিদ্দিকী।
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা নিয়ে যে ২০১৬ সালের যে আন্তর্জাতিক বিধিমালা আছে সেখানে বলা হয়েছে, যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে অভিবাসী শ্রমিকরা যেই দেশে অবস্থান করবেন, তাদের দায়িত্ব সে দেশের ওপরই পরবে। কিন্তু অভিবাসী গ্রহনকারী দেশ গুলো তা তোয়াক্কা করছেনা।
তবে যেসব শ্রমিক করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের ফিরে এসেছেন তাদের দ্রুত দেশের ভেতরেই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। বিশ্ব মহামারীর এ অনিশ্চয়তায় শ্রমিকরা কবে বিদেশ যেতে পারবে এটার কোন নিশ্চয়তা নেই।
তাই অভিবাসীদের পূর্নবাসন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় দিক দিয়ে সরকারকে সমন্বয় করতে হবে। সেটি না করা হলে অনিশ্চয়তায় পরবে প্রবাসীদের জীবন ও জীবিকা। যা হয়তো আমাদের দেশের অর্থনীতির বিকাশে অনেক বড় বাধা হয়ে দাড়াতে পারে।
আরো পড়ুন –
মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী কর্মীদের তাড়াতে মরিয়া ৮ দেশ