কে এই ডা. ফেরদৌস খন্দকার ?

কে এই ডা. ফেরদৌস খন্দকার ?
কে এই ডা. ফেরদৌস খন্দকার ?

ডা. ফেরদৌস খন্দকার নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের মধ্যে একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বারে। তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের ভাতিজা  বলে জানা যায়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ১৯৯৮ সালে ডা. ফেরদৌস খন্দকার যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকায় চলে গিয়েছিলেন এবং সেখানে যাওয়ার পর তিনি জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এখন যেমন তার এতো নাম, যশ আর পরিচিতি রয়েছে, একসময় এর কিছুই ছিল না।

আর দশজন সাধারণ অভিবাসীর মতই তিনি সেই শহরে ভাগ্যের অন্বেষনে ঘুরেছেন। সম্পন্ন পরিবারের ছেলে হয়েও সেসময়ে তিনি নিউইয়র্কে ট্যাক্সিক্যাব চালিয়েছেন। বাবা-মা আমেরিকায় থাকলেও নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পরিশ্রম আর অধ্যবসায়কে বেছে নিয়ে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন।

এমনও অনেক দিন গেছে তিনি টানা ১৯ ঘণ্টা হলুদ ট্যাক্সি চালিয়েছেন। সেই ট্রাক্সি চালিয়েই তিনি পরিবারের খরচ যোগানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে ডাক্তারী পেশার জন্য প্রাকটিস সনদ পরিক্ষার খরচ যুগিয়েছেন।

রোগিদের আস্থা আর তাদের প্রতি সেবাকে আরো বিস্তৃত করতে ডা. ফেরদৌস খন্দকার, সমমনাদের নিয়ে জ্যাকসান হাইটস এর ব্যস্ততম ৩৭ স্ট্রিটে ৭০-৩৮ ব্রডওয়ে তে ওয়েস্ট্রান কেয়ার মেডিকেল পিসি নামের একটি ৭ তলা মেডিকেল সেন্টার দাঁড় করিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠানে দেশী বিদেশী বিভিন্ন ডাক্তাররা বসেন।

বর্তমানে তিনি একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশী, ভারতীয় এবং পাকিস্থানী নাগরিকদের মধ্যে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছেন। এর কারণ সম্পর্কে সেসময়ে তিনি বলেছিলেন, বিক্ষিপ্তভাবে নানান জায়গায় চিকিৎসার জন্য না গিয়ে মানুষ যেন এক ছাদের নিচেই প্রয়োজনীয় প্রায় সব চিকিৎসা সেবা নিতে পারে সেই স্বপ্ন থেকেই আমি এই নতুন বিশাল মেডিকেল ভবনটি দাঁড় করিয়েছি।

আর আমার সমস্ত ধ্যানজ্ঞান আমি এই চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা বিষয়ক জ্ঞান বাড়াতেই ব্যয় করে থাকি। এছাড়া, ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার বৃদ্ধ এবং নারীদের প্রতি যথেষ্ট যত্নবান।

সেইসাথে চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখার পাশাপাশি তিনি ফেসবুক এবং ইউটিউবে নিয়মিত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানা ধরনের তথ্য ও মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার বলেছিলেন, আমি বরাবরই চেয়েছি সাধারন মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য বিষয়ক জ্ঞানের পরিধি বিস্তার হোক। একজন মানুষ যখন ডাক্তারের চেম্বারে আসে, তখন তিনি একাই সেই ডাক্তারী পরামর্শ পান।

এরপর সেটা যখন তিনি অন্যদের মাঝে শেয়ার করেন তখন সেখানে অনেক ভুলত্রুটি থাকতে পারে। তাছাড়া, ছোট ছোট কারণে যেন মানুষকে ডাক্তারের চেম্বারের দিকে দৌঁড়াতে না হয়, এ সকল ভাবনা থেকেই আমি চিকিৎসা বিজ্ঞানের ধারনা ছড়িয়ে দিতে একটু একটু করে সামাজিক গনমাধ্যমকে বেছে নেই।

আর মানুষও সেটাকে গ্রহন করেছে সানন্দের সাথেই এবং এ থেকে আমি অনেক অনুপ্রেরনাও পাই। তাই অনেক ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও আমি ভিডিও রেকর্ড করি এবং তা সামাজিক গনমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে মানুষকে সচেতন করি।

পেশাগত ও সামাজিক জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে নিজের এলাকার জন্য এবং স্বদেশের মানুষের জন্য কিছু করার তাড়না থেকে বছরে অন্তত চারবার দেশে যান ডা. ফেরদৌস খন্দকার। অর্থনৈতিকভাবে বেশ সফল হলেও ভ্রমণের সময় তিনি বাড়তি কোনো ধরনের ব্যয় করেন না।

বরং বেঁচে যাওয়া সেই অর্থকে তিনি মানুষের কল্যাণে ব্যয় করে থাকেন। এমনকি নিজের অর্থ ব্যয় করে তিনি গ্রামের মানুষেদের জন্য হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রম করছেন। এসব কাজ করতে গিয়ে তাকে নানা ধরনের বাধাবিপত্তি মোকাবেলা করতে হয়েছে।

বর্তমানেও তিনি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে ফিরেছেন। আজ রোববার বিকেলে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ৮ সদস্যের চিকিৎসক দল নিয়ে তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন।

কিন্তু ডা. ফেরেদৌস খন্দকারের অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি জানার পর থেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তার ওপর বিশেষ নজর রাখতে শুরু করেছেন বলে জানা যায়।

বলা হচ্ছে, ডা. ফেরেদৌস খন্দকার যখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) পড়াশুনা করছিলেন তখন নাকি বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং গত বছর তিনি নাকি নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার পদ পান।

যদিও পরবর্তীতে তাকে  সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। তবে এ বিষয়ে ডা. ফেরদৌসের কাছ থেকে এখনও কোনো ধরনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলেও জানা যায়।

curious 1

আরো পড়ুন –

কফিন ড্যান্স এবং এর আসল ঘটনা –
শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন