বলা হয় ভালবাসায় দিয়ে সব কিছুই গরা সম্ভব। তবে এই কথাটি সত্যি হলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ খুব একটা দেখা যায়না। বিশেষ করে প্রাণীদের ক্ষেত্রে তো অনেকাংশেই নয়।
আমাদের বিশ্বে এমনো বিভিন্ন প্রানী রয়েছে যারা একে অপরের ঘোর শত্রু। আজ আমি আপনাদের সাথে কথা বলবো আমাদের বিশ্বের বিভিন্ন প্রাণী সম্পর্কে যারা একে অপরকে কিছুতেই দেখতে পারেনা।
বিড়াল এবং ইদুর –
টম এন্ড জেরি কার্টুনটি বোধয় আমরা সবাই দেখেছি যেখানে সর্বোদাই টম এবং জেরি একে অন্যের সাথে ঝগরায় লিপ্ত থাকে। ঠিক তেমনি ভাবে বাস্তবেও এই বিড়াল এবং ইদুরের মধ্যে সর্বদা কিছুটা বিভেদ দেখা যায়।
বিশেষ করে কোন বাড়িতে যদি আপনি বিড়াল পোষেন তাহলে দেখবেন সেখান থেকে খুব শিগ্রই ইদুর বাহিনী তাদের ভ্যাক সুট গুছিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। কারন যেকনো বিড়ালের জন্য ইদুর হচ্ছে দুই চোখের বিষ।
অন্যদিকে ইদুরের জন্য বেড়ার হচ্ছ সুন্দর বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারে মত। যে কারনে বাস্তবে যদিও কোথায় বেড়ালের ডাক শোনা যায় সেখানে ইদুরের টিকিটাও দেখতে পাওয়া যায়না। অবশ্য এই বেড়ালের আরেকটি শ্ত্র হচ্ছে ছোট পাখি।
বেরাল বেশির ভাগ সময়ে ছোট পাখিকে দেখতে পারেনা।সুযোগ পেলেই এরা সেই পাখিকে ইদুরের মত মেরে খেয়ে ফেলতে পারে। তাই আপনি যদি ঘরের ভেতরে বেরাল সহ ছোট পাখি পালনের কথা ভাবেন। তাহলে এর পূর্বে আরেকটা বার অন্তত চিন্তা করে নিবেন।
সাপ এবং বেজি –
সাপ এবং বেজির লড়াই কথাটি আপনি হয়তো একটি বার হলেও শুনেছনে। তবে বাস্তবেই এই কথার সাথে কাজেও অনেকটা মিল রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন শ্ত্রু ধর প্রাণীদের মধ্যে সাপ এবং বেজি হচ্ছে অন্যতম।
এরা দুজনেই বিষধর প্রাণী হলেও তুলনা মূলক ভাবে সাপের বিষ অনেকটাই বেশি হয়ে থাকে। তবে গঠনের দিক থেকে বেজি কিছুটা বড় থাকায় কেউ কাউকে বিন্দু মাত্র ছাড় দিয়ে কথা বলতে চায়না।
বিশেষ করে এদের খদ্যাভাসে অনেকটাই মিল থাকায়। খাবার নিয়ে বা অন্য কিছুই নিয়েও এদের প্রায় সময়ে মারামারি করতে দেখা যায়।
হাতি এবং গন্ডার –
পৃথিবীর বিশাল আকৃতির প্রানিদের মমধ্যে অন্যতম হচ্ছে হাতি এবং গন্ডার । এরা দুজনেই শস্য ভোজি হলেও রেগে গেলে কেউ কারো থেকে কম যায়না। তবে আকৃতি এবং শক্তির দিক থেকে হাতি অনেকটা এগিয়ে থাকার কারোনে গন্ডারের সাথে মারা মারিতে হাতি বেসির ভাগ সময় জয়লাভ করে ।
আর তাছারা হাতিরা যেহেতু দলবদ্ধ ভাবে চলে তাই কখনই হাতি দের সাথে গন্ডারের পেরে উঠাও হয়না। তবে তাই বলে কিন্তু গন্ডারকে আপনি খাটো করে দেখবেন্না, কারন গন্ডারের নাকের উপরে থাকা শিং দিয়ে অনেক সময়ে হাতির শরীর ফুটো করে দেবার নজির বিদ্যমান ।
ডলফিন এন্ড শার্ক –
স্থলের পাশা পাশি জলেও বিভিন্ন প্রাণী অন্যান্য দের মত একে অন্যকে সহ্য করতে পারেনা। যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডলফিন এবং হাংগর। হাংগর মাছ অনেকটা হিংস্র হলেও সে তুলনায় আমরা জানি ডলফিন কিন্ত শান্ত প্রকৃতির। তবে মাঝে মাঝে এই ডলফিন মাছ হাংগরে জন্য বিশাল সমস্যার কারন হয়ে দাড়াতে পারে।
হাংগর অনেকটা শক্তি শালি থাকলেও ডলফিন মাছ সাগরের মধ্যে দ্রুত তার সাথে এবং দলবধ্য ভাবে চলার কারনে কখনই হাংগর মাছ ডলফিন মাছের সাথে পেরে উঠেনা। বিশেষ করে ডল ফিন মাছরা তাদের সরু মুখ দিয়ে হাংগরের শরীরের যখন আঘাত করে তখন সেই আঘাত হাংগরের জন্য হয়ে উঠে অনেকটাই বেদনা দায়ক।
যে কারনে আপনি হয়তো শুনে থাকবেন সাগরে ভাসমান মানুষকে হাংগরের কাছ থেকে রক্ষা করলো ডলফিন মাছ। মজার বিষয় হচ্ছে ডলফিন মাছ কিন্তু অনেকটাই মিশুক। এরে মানুষ দেখলে মানুষের কাছা কাছি থাকতে পছন্দ করে। অনেক সময়ে মানুষের খুব নিকটেও চলে আসে।
র্যাবিটস এন্ড গিনিপিক্স –
আমরা হয়তো অনেকেই এই দুটি প্রাণিকে মিলিয়ে ফেলতে পারি তবে বাস্তবে এরা ভিন্ন দুটি প্রানি।
সাধারনত খরগশকে অনেকটাই শান্তসিষ্ট ভদ্র মনে হলেও খরগশ কিন্তু বাস্তবেই তা নয়! বিশেষ করে খরগোশরা তাদের থেকে ছোট আকৃতির প্রাণীদের জন্য অনেকটাই আত্নকের কারন হয়ে থাকে। ঠিক যেমন্টা গিনিপিক্সের জন্য।
খরগোশ বিরালের মতই অনেকটা সৌখিন প্রাণী। এরা বিস্তর স্থানে ঘুরে বেরাতে পছন্দ করে। নিজের জিনিসের সাথে অন্য কাউকে ভাগ বসাতে দিতে চায়না। যে কারনে আপনি যদি এই দুটি প্রাণী এক সাথে লালন পালন করেন তাহলে দেখবেন খরগোশের ভয়ে গিনিপিক সব সময়ে একটি কোনায় আবদ্ধ হয়ে থাকে।
পক্ষান্তরে গিনিপিক চুপ চাপ থাকলেও খরগোষ সর্বোদাই গিনি পিকের ঘুম হারাপ করে দেবার চিন্তায় ব্যাস্ত থাকে । বলা হয় খরগোশরা গিনিপিককে মেরে ফেলার জন্য বিশাক্ত গ্যাস বের করে থাকে। যার ফলে গিনি পিকের শ্বাস নিতে কষ্ট হবার মত সমস্যার সৃষ্টি হয়।
পোলার বিয়ার এন্ড ওয়াল রাস –
মানব সভ্যতা থেকে অনেকটাই দূরে বরফের দেশে বাস করা প্রাণী দুটি কিন্তু একে অপর কে কিছুই তেই দেখতে পারেনা, যার কারন হচ্ছে এদের খাদ্যাভাস। কথা বলছি শ্বেত ভাল্লুক এবং সিন্ধুঘোটকের। এই প্রাণী দুটির প্রধান খাদ্য হচ্ছে মাছ।
যে কারনে প্রায় সময়ে এরা একে অন্যের সাথে ঝগরায় লিপ্ত থাকে। যদিও শ্বেত ভাল্লুককে বরফের দেশের রাজা বলা হয়। কিন্তু প্রক্ষান্তরে সিন্ধুঘোটক দলবদ্ধ ভাবে থাকার কারনে এরাও কিন্তু অনেক সময়ে শ্বেত ভাল্লুক কে ছেরে কথা বলা বলে।
বেশির ভাগ সময়ে দেখে যায় শ্বেত ভালুক কোন সিন্ধুঘোটকে সুযোক বুঝে মেরে ফেলেছে। কারন তারা চায়না তাদের খাবার গুলকে অন্য কোন প্রাণী এসে ভাগ বসাক। বলা হয় শ্বেত ভাল্লুকরা তাদের শরীরের প্রায় তিন গুন বিশাল আকৃতির বড় প্রাণীকেও শিকার করতে ভয় পায়না।
লায়ন্স এন্ড হায়নেন্স –
সিংহকে বনের রাজা বলা হলেও একটি সময়ে কিন্তু এই সিংহ হিংস্র হায়নাদের কাছে অনেকটাই অসহায় হয়ে যায়। সাধারনত সিংহ এবং হায়না উভয়েই মাংসাশী। তবে সিংহের কম বয়সে তার বুদ্ধির মত্তার সাথে শিকার করতে পারলেও বৃদ্ধ বয়সে সেটি তার পক্ষে আর সম্ভব য়ে উঠেনা।
আর এই সুযোগ টাকেই কাজায় লাগায় ভয়ংকর হায়না বাহিনীরা। শেষ বয়সে যেহেতু সিংহ তার নিজের শিকার করতে ব্যর্থ হতে থাকে তখন এই সুযোগে সিংহের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বয়স্ক সিংহের উপরে ঝাপিয়ে পরে হায়নার দল।
পরিশেষে দেখা যায় বেশির ভাগ সিংহকেই শেষ বয়সে হায়নাদের হাতেই মারা যেতে হয়। তবে অনেক সময় এর বিত্তিক্রম ঘটতে দেখা যায়। এর জন্য অবশ্য বৃদ্ধ সিংহকে দলবদ্ধ ভাবে থাকতে হয়। যা তারা বেসির ভাগ ক্ষেত্রেই করেনা।
এ সম্পর্কিত আমাদের ভিডিও –
আরো পড়ুন –
বিশ্বের-সবচাইতে দির্ঘজীবি কিছু প্রাণী !
বিভিন্ন ধরনের মাছ নিয়ে জানার আগে পদ্মার ইলিশ সম্পর্কে জানা যায়। এদের সম্পর্কে জানতে ভিজিট করে আসতে পারেন।