রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাঁচটি সহজতর উপায়

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাঁচটি সহজতর উপায়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাঁচটি সহজতর উপায়

সকল বয়সের মানুষের জন্যই সবসময় দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাহলে করোনাভাইরাস হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

তাই যে কোনো রোগ থেকে বাঁচতে হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। আর এ কারনে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বিশেষজ্ঞরা দৈনিক পাঁচটি নিয়ম মেনে চলতে বলেছেন। সেগুলো হলোঃ

১. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও দূরত্বঃ

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবার আগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে হাত এবং নিজেদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

এর পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং হাঁচি আসলে নাক মুখ ঢেকে হাঁচি দিতে হবে। আর এ বিষয়গুলো আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।

২. খাদ্যাভাসঃ

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্যকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে শাকসবজি, দুধ, ডিম, ফলমূল, দুগ্ধজাতীয় খাবার, ভিটামিন-সি জাতীয় টক ফলমূল ইত্যাদি খাবার গুলোর দিকেই নজর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া, আমাদের শরীরের জন্য কোন খাবারগুলো ভালো তা আমরা অনেকসময় নিজেরাই বুঝতে পারি। তাই ভারসাম্য রেখে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিৎ।

ইমিউনলজিস্ট ও ভ্যাকসিনোলজিস্ট ড. ফেরদৌসী কাদরি বলেন, মানুষের মধ্যে যে বিশ্বাসটা রয়েছে সে বিশ্বাস থেকেই সবটা খেতে হবে। তিনি বলেন, মধু অবশ্যই ভালো।

এছাড়া কালোজিরা সব সময় মানুষ আদিকাল থেকেই খেয়ে আসছে। কালোজিরার তেল, মধু, আদা, রসুন, তুলসী ইত্যাদি সবকিছুই খাওয়া উচিত। কারণ, তখন আমরা

এইটা ভেবে আনন্দে থাকবো যে আমরা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কিছু একটা করতে পেরেছি এবং এইটার যে উপকারী প্রভাব স্বাস্থ্যের উপর পড়বে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

তিনি আরও বলেন, এর জন্য কেউ যদি হলুদ খেতে চায় সে তাও খেতে পারে। কারণ, হলুদ সত্যিকার অর্থেই ভালো। তাই আমাদেরকে স্বাস্থ্যকর সব কিছুই খেতে হবে।

তবে এগুলো দিয়ে যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা যায় তা মনে করা যাবে না। এগুলো শুধুমাত্র দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে এবং দেহের ভালো কাজগুলো সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।

৩. শারীরিক পরিশ্রমঃ

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে খাবারের পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে শারীরিক পরিশ্রম। শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখতে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা জরুরি।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শারমিন ইয়াসমিন বলেন, অনেক ধরনের ব্যায়াম আছে, যেমনঃ ইয়োগা একটি ব্যায়াম।

তাছাড়া হাঁটা, সাঁতার কাটা, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এমন কিছু ব্যায়াম যদি আমরা নিয়মিত করি তাহলে আমাদের দেহের যে সকল ব্যাকটেরিয়াগুলো পাকস্থলীতে থাকে সেগুলো বের হয়ে যাবে।

৪. মন ভালো রাখাঃ

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মন ভালো রাখার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ড. ফেরদৌসী কাদরি বলেন, সুস্থ থাকার জন্য সবার আগে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।

আমরা যখন কোন কিছুতে সারাক্ষণ ভয়ে কিংবা ভিতিতে থাকি তখন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও আস্তে আস্তে কমতে থাকে। তাই আমরা সবসময় সুস্থ থাকার জন্য হাসার চেষ্টা করব, ভালো কিছু চিন্তা করার চেষ্টা করব এবং কোন একটা কাজ নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করব।

এর থেকে বোঝা যায় যে, মানসিকভাবে ভালো থাকাটা শরীরের উপরেও প্রভাব ফেলে। তাই দুশ্চিন্তা না করে হতাশা, দুশ্চিন্তা, চাপ ইত্যাদি জিনিস গুলো কে দূরে ঠেলে নিজের মতো করে ভালো থাকার ব্যাপারটি নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। তাহলেই আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে।

৫. রুটিন মাফিক জীবনঃ

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষজ্ঞদের আরো একটি পরামর্শ হচ্ছে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী দিনের রুটিন টাকে সাজিয়ে নেওয়া। যেমনঃ প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে কি করবো, কখন ব্যায়াম করবো, খাব, ঘুমাবো ইত্যাদি।

একটি নির্দিষ্ট সময় অনুসারে করতে হবে। এছাড়া, দৈনিক কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে, প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে এবং এর বাইরে শরীরের জন্য ক্ষতিকর এমন অভ্যাসগুলোকে নিজ থেকেই পরিহার করতে হবে।

আর উপরের এই সকল নিয়মগুলো সব মেনে চললে আমরা যে কোনো রোগের সাথেই লড়াই করতে সক্ষম থাকবো। আমাদের দেশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য যেকন সময়ের থেকেই বৃদ্ধি পাবে।

আমাদের ইউটুব চ্যানেল – 

আরো পড়ুন –

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন