কে এই কিটো ভাই? সম্প্রতি সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে কিছুগান। যেখানে দেখা যায় কিটো ভাই নামে ফেসবুক পেজ কিংবা ইউটুব চ্যানেল থেকে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কিছু গান গাওয়া হচ্ছে।
সারা বিশ্বের পাশাপাশি দেশে যখন করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়তে লাগলো তখন সরকারের পক্ষ থেকে মানুষকে ঘরে থাকার তাগাদা দেওয়া শর্তেও মানুষ সে তাগাদা উপেক্ষা করে তাদের খেয়ালখুশিমতো চলতে থাকলো।
ঠিক তখনই এই কিটো ভাই’ নামের এক ইউটিউবার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় একটি গান তৈরি করে, সেই গানের মাধ্যমে তাদেরকে ঘরে থাকার আহব্বান করলেন।
এই গানটি এতোটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে, শুধুমাত্র কিটো ভাইয়ের ফেসবুক পেজের পোস্ট থেকেই গত পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত এটি দেখা হয়েছে প্রায় ২৫ লাখেরও বেশি বার। এছাড়া ৫৩ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী এটি শেয়ার করেছেন।
এতক্ষন তো কিটো ভাই নিয়ে অনেক কথা হলো। অনেকেই জানতে চাইবেন কে এই কিটো ভাই? কিটো ভাই হলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। যার প্রকৃত নাম হলো মাশরুর ইমান।
তিনি একজন আমুদে মানুষ। আর এই নামেই বাড়তি কদর রয়েছে পরিচিত মানুষ জনের কাছে। মানুষ হাসিয়ে এবং সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে তিনি তার প্রতিভা দেখিয়েছেন।
সাথে নিজের এলাকা এবং এলাকার ভাষার প্রতি টান থেকেই সাম্প্রতিক খাঁটি ‘বরিশাইল্যা ভাষায়’ নানা বিষয়ে নিজের অভিমত তুলে ধরে সেসব ফেসবুকে, ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করেন তিনি।
কিটো ভাই হয়ে উঠতে এ বছরের শুরুর দিকে এমনই একটি পোস্ট মাশরুর ইনানকে সাহায্য করেছে। আর শুরুর সেই ঘটনাটি হলো এমন… বরিশালে ইমানদের বাসায় গত বছরের শেষের দিকে উৎসবের আবহ ছিলো।
সে সময়ে একান্নবর্তী পরিবারের চল ধরে রাখায় ভোজনরসিক ইনানের ওপর অনেকটা ভাত খাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি হলো।
সাথে মা-বাবা-বোনসহ বাড়িতে আসা অন্যরাও তখন ওজন কমাতে কিটোজেনিক বা কিটো ডায়েট চর্চা করছিলো। কিন্তু ডায়েট ব্যাপারটা ইনানের মতো মানুষের কাছে রীতিমতো নিজের ওপর অত্যাচার বলে মনে হতো।
তাই বাড়ির সবাই যখন ডায়েট পরিকল্পনা মেনে খাবার খেতো তখন দুমুঠো ভাত আর আলুভর্তার জন্য তার পাকস্থলী যুদ্ধ শুরু করে দিতো। কিন্তু সে যুদ্ধ তিনি বন্ধ করতে পারতো না। কারন, ভাত আর আলুভর্তারর বদলে তাঁর সমানে সালাদ আর সেদ্ধ ডিম আসতো।
তখনি ইমান মনের দুঃখে বিপ্লবী হয়ে ছোট এই জীবনে তার ভাত না খেয়ে ডায়েট করার বিরুদ্ধে নিজের মনের কষ্টগুলো ভিডিও ধারণ করলেন এবং সেটিকে তখন তিনি ফেসবুকে ছাড়লেন। আর ভিডিওটির নাম দিলেন ‘কিটো ডায়েট’।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর তার মতো যারা এই দুঃখের মধ্যে রয়েছেন ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে তাদের হাজার হাজার মন্তব্য পড়লো। তখনই একটি মন্তব্যে “কিটো ভাই” নামে মাশরুরু ইনানকে সম্বোধন করা হয়েছিল।
আসলে সেখানে ওই লোকটি ইংরেজি কিউট অর্থে কিটো শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। আর সেই আদরমিশ্রিত নামটা তখন ইমানের পছন্দ হয়ে গেলো। এরপরে সেই নামটা দিয়েই তিনি ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুকে পেজ খুলেন।
আস্তে আস্তে সেখান থেকেই “কিটো ভাই” এর পরিচয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন মাশরুর ইমান। এছাড়াও হুমায়ূন আহমেদের তীব্র ভক্ত এই মাশরুর ইমান। আর এজন্যই প্রিয় লেখকের বইয়ের নামে ব্যান্ডের নামকরণ করেছেন “এলেবেলে”। ছয় সদস্যের সেই ব্যান্ড নিয়েও অনেক বড় স্বপ্ন তাঁর।
আরো পড়ুন-
পৃথিবীর সবচাইতে দামি মোরগ – আইয়াম সেমানি