তুলসী পাতার উপকারিতা হয়তো বলেও শেষ করা যাবেনা। যেকারনে একে দীর্ঘজীবী হওয়ার মহা ঔষধ বলা হয়। মূলত তুলসি একটি ঔষধিগাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই।
তুলসী এর ইংরেজি নাম holy basil বা tulasi এর বৈজ্ঞানিক নাম Ocimum Sanctum. তুলসী গাছ লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত একটি সুগন্ধী উদ্ভিদ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি পবিত্র উদ্ভিদ হিসাবে সমাদৃত।তুলসী গাছের পাতা, বীজ, বাকল ও শেকড় সহ সবকিছুই অতি প্রয়োজনীয়। এই ঔষধিগুণ সম্পন্ন তুলসী বিভিন্ন রোগ সারাতে কাজ করে। আসুন জেনে নেয়া যাক তুলসী পাতার জাদুকরী কিছু গুন ও এর উপকারিতা-
১. তুলসী পাতার রস খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
২. ঠাণ্ডা-কাশি থেকে রক্ষা পেতে তুলসী পাতা ও আদার রসের সঙ্গে একটু মধু মিশিয়ে খেলে ঠাণ্ডা-কাশি ভালো হয়।
৩. সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের রুচি বাড়ে।
৪. পানিতে তুলসী পাতার সঙ্গে এলাচ ফুটিয়ে পান করলে নিমিষেই জ্বর চলে যায়। এমনকি এর রস খেলে দ্রুত জ্বর ভাল হয়।
৫. তুলসী পাতা গরম পানিতে সেদ্ধ করে সে পানিতে গড়গড়া করলে মুখ ও গলার রোগজীবাণু মরে যায়, শ্লেষ্মা দূর হয়।
৬. খালি পেটে নিয়মিত তুলসীর পাতা খেলে কিডনির পাথর দূর হয়। বহুকাল ধরে কিডনির পাথর দূরীকরনে এ চিকিৎসা নেয়া হয়।
৭. তুলসীর চা শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর করে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়।
৮. মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথা কমাতে তুলসী খুবই উপকারী।
৯. এ গাছের ফাইটোকেমিক্যাল বয়সের কারণে দেহের ক্ষয় নিরাময় করে। এমনকি দেহে ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই এটি ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রনে রাখে।
১০. চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ওই পানি দিয়ে সকালবেলা চোখ ধুয়ে ফেলুন।
১১. মানবদেহের যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে তুলসীর পাতা অনন্য। এতে রয়েছে জীবাণুনাশক ও সংক্রমণ শক্তিনাশক উপাদান।
১২. ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং ঠাণ্ডা-সর্দিতে তুলসী পাতার সঙ্গে মধু ও আদার মিশ্রণ দারুণ কাজ করে।
১৩. তুলসীর পাতায় তৈরি হালকা গরম জুস পাকস্থলীর প্রদাহ নিরাময় করে।
১৪. মুখের দুর্গন্ধ, দাঁত পরিষ্কার ও সুন্দর, এমনকি দাঁতের ক্ষয়সহ অন্যান্য দন্ত চিকিৎসায় তুলসী অতুলনীয়।
১৫. রাতকানা রোগ সারাতে প্রাচীনকাল থেকে তুলসীর ব্যবহার প্রচলিত।
১৬. শরীরের বিভিন্ন ঘা ক্ষত এবং দেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে তুলসী।
১৭. প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে বেস্ট ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং হার্টের উপকার হয়।
১৮. এটি বয়সের ছাপ দূর করে এবং যৌবন ধরে রাখে।
১৯. তুলসী পাতা বেটে মুখে লাগালে ত্বকের ব্রন,গোটা এবং এ জাতীয় যেকোন সমস্যা দূর হয় এবং ত্বক মিহি করে।
২০. তুলসী পাতার রসের সাথে কাঁচা হলুদের রস এবং সামান্য মধু মিশিয়ে দিনে ৩/৪ বার লাগালে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ত্বকের সাদা দাগ দূর হয়ে যায়।
ফুসফুসের দুর্বলতা, কাশি, কুষ্ঠ, শ্বাসকষ্ট, সর্দিজ্বর, চর্মরোগ, বক্ষবেদনা ও হাঁপানি, হাম, বসন্ত, কৃমি, ঘামাচি, রক্তে চিনির পরিমাণ হ্রাস, কীটের দংশন, কানব্যথা, ব্রংকাইটিস, আমাশয় ইত্যাদি তুলসী দিয়ে তৈরি ওষুধ বিশেষভাবে কার্যকর।
এছাড়া মশার কামড় থেকে বাঁচতে হলে মশারি টানানো, অ্যারোসল স্প্রে করা অথবা তীব্র ধোঁয়াযুক্ত কয়েল জ্বালানোর প্রয়োজন পড়বে না। যদি তুলসী থাকে ঘরে।
তাই ব্রিটিশরা একে বলত মসকিউটো প্লান্ট। তুলসীতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান রয়েছে। এগুলো রক্ত পরিশুদ্ধ করে। এছাড়াও বিপাকক্রিয়ার সুষ্ঠুতায় এর ভূমিকা চমক প্রদক।
আরো পড়ুন –
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা