নেটফ্লিক্স একটি মার্কিন বিনোদনধর্মী প্রতিষ্ঠান, যেটি ১৯৯৭ সালের ২৯ আগস্ট মাসে রিড হ্যাস্টিংস এবং মার্ক রেন্ডোল্ফ দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের স্কটস ভ্যালি শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লা গ্যাটস শহরের ১০০ উইনচেস্টার সার্কেলে অবস্থিত।
এছাড়াও তাদের আরো কয়েকটি কার্যালয় রয়েছে, যেগুলো নেদারল্যান্ডস, ব্রাজিল, ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ , জাপান এবং উত্তর কোরিয়া-তে অবস্থিত। বিশ্বের ১৫ ভাগ ইন্টারনেট ট্রাফিক নেটফ্লিক্স দিয়েই আসছে। নেটফ্লিক্সে ৭৬০০০ সাব-ক্যাটেগরি রয়েছে। এবং এর সাবস্ক্রাইবারসংখ্যা প্রায় ১৫৮+ মিলিয়ন।
সারাদিন বসে বসে প্রোগ্রাম দেখার জন্যও বেতনভুক্ত কর্মী আছে নেটফ্লিক্সে। এটি মূলত সংস্থান মিডিয়া দর্শন এবং প্রয়োজন মাফিক অনলাইন ও ডিবিডি মেইল এর মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য পাঠাতে দক্ষ। নেটফ্লিক্স পরবর্তীতে চলচ্চিত্র এবং ছোট পর্দার ধারাবাহিক, চলচ্চিত্র পরিচালনাতে সম্প্রসারিত হয়।
এর সাথে ইন্টারনেট ভিত্তিক অনলাইনে চলচ্চিত্রের বন্টনও চালু করে। ২০১৩ সালে একাডেমী কিংবা গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড এর আদলে নেটফ্লিক্স নিজেরা “দ্য ফ্লিক্সিস” নামক একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলো। অবশ্য এটা পুরোটাই একটি মজার অনুষ্ঠান ছিল।
তবে এর আগে ২০১৩ অর্থাৎ একই সালে নেটফ্লিক্স কনটেন্ট প্রযোজনা শিল্পে প্রবেশ করে তাদেরই প্রথম পরিচালিত ধারাবাহিক হাউজ অব কার্ডস দ্বারা আত্নপ্রকাশ করে। এরপর থেকেই চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ধারাবাহিক উভয়ের তৈরীতে ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করে।
অবাক করা বিষয় হচ্ছে নেটফ্লিক্স এর বয়স গুগল থেকেও বেশি। অথচ ব্লকবাস্টার, কিছু বছর পূর্বে সস্তায় পেয়েও নেটফ্লিক্সকে কিনেনি। এশিয়ায় যাত্রা শুরুর তিন মাস কাটিয়ে শততম দিনে নেটফ্লিক্স প্রধান নির্বাহী রিড হ্যাস্টিংস জানান দেন, এক কোয়ার্টারে তাদের ৪০ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে।
এশিয়ার মধ্যে নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে ভারতে। কমবয়সী আর প্রযুক্তিবান্ধব মধ্যবর্তী শ্রেণির কাছে এই প্ল্যাটফর্ম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই প্ল্যাটফর্মের পরবর্তী ১০ কোটি গ্রাহক ভারত থেকে আসতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন হেস্টিংস।

এদিকে ভারত নেটফ্লিক্সে অর্থ আয়ে নিজের বড় ভবিষ্যত দেখে স্বাগত জানায়। আর এরই মধ্যে সে পথে অনেকটা এগিয়েও গেছে দেশটি। নেটফ্লিক্স ভরে যাচ্ছে বলিউডের সিনেমায়। তবে তখনই বেঁকে বসে ইন্দোনেশিয়া। কোনও লাইসেন্স ছাড়া নেটফ্লিক্স ঢুকে পড়ছে দেখে তা আটকে দেয় দেশটি।
শুধু ইন্দোনেশিয়া নয় বিশ্বের আরও অনেক দেশেই নেটফ্লিক্সকে নানা বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে নেটফ্লিক্সকে এ নিয়ে সামান্য ভাবতেও হয়নি। সরাসরি ঘোষণা দিয়েই যাত্রা শুরু। এরপর শুধুই আয়ের অংক গণনা।
যাত্রা শুরুর সময় বাংলাদেশের কোনও কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের কোনো কথা হয়েছে এমনটাও জানা যায়নি। প্রতিবছর দেশ থেকে গোপনে অবৈধভাবে দুই শ’ কোটি টাকারও বেশি নিয়ে যাচ্ছে নেটফ্লিক্স। যার কোনও খবর কারো কাছে নেই। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কাছে নেটফ্লিক্স সংক্রান্ত কোনো তথ্যও মিলছে না।
অথচ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে নেটফ্লিক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি বলে জানাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)’র একটি দায়িত্বশীল সূত্র।
যাদের কাছ থেকে মাসে গড়ে অন্তত ১০ ডলার করে চার্জ করছে নেটফ্লিক্স। অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে সিনেমা, নাটক ও সিরিজ দেখিয়ে, কার্ড থেকে অনলাইনেই চার্জ করে নিয়ে নিচ্ছে এই অর্থ। যার জন্য কোনো ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করা হচ্ছে না।
যা অবৈধ ও দেশের জন্য বড় ক্ষতি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে শিগগিরই এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষনা এসেছে বিটিআরসি ও এনবিআর এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই। বাংলাদেশ ব্যাংকও বলেছে তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছে।
আরো পড়ুন –
আইএমডিবি (IMDB) কি ? কেন একে ব্যাবহার করা হয় ?