লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এই নাম কেউ শোনেনি এমন মানুষ হয়তো কোথাও খুজে পাওয়া যাবেনা। তবু আপনি যদি না শুনে থাকেন তাহলে যেনে রাখুন বিশ্ব বিখ্যাত কালজয়ী চিত্র মোনালিসার শিল্পী হচ্ছেন এই লিওনার্দো দা ভিঞ্চি।
১৪৫২ সালের ১৫ এপ্রিল লিওনার্দো দা ভেঞ্চি ইতালির ফ্লোরেন্সে প্রদেশে জন্ম গ্রহন করেছিলেন। ১৫১৯ সালে দা ভেঞ্চি মৃত্যুর পূর্বে যা কিছু করে গিয়েছেন। তা এখন পর্যন্ত সকলের কাছে অবাক করা বিষয় ছাড়া আর কিছুই নয়। একজন মানুষ চাইলে যে অনেক কিছুই করতে পারে, তার একমাত্র উদাহরন হয়তোবা এই লিওনার্দো দা ভিঞ্চি।
লিওনার্দো শুধুমাত্রযে চিত্র শিল্পী ছিলেন তা নয়, বরং তিনি ছিলেন একাধারে – সাহিত্যিক, লেখক, দার্শনিক, স্থপতি, চিকিৎসক, সঙ্গীতজ্ঞ, বিজ্ঞানি এছাড়াও ছিলেন বিংশ শতাব্দীর বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্যের জনক। যেকারনে লিওনার্দো দা ভিঞ্চিকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সকল বিখ্যাত লোকদের কাতারে রাখা হয়।
তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে দা ভিঞ্চি কিন্তু কখনই স্কুলে যায়নি। ভিঞ্চির বাবা ছোট বেলায় তার প্রতিভা দেখে তাকে একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। যেখান থেকেই লিওনার্দো ভিঞ্চির বেড়ে উঠা। তখন কেইবা জানতো, এই ভেঞ্চি মৃত্যুর প্রায় ৫০০ বছরের পরেও এতটা জনপ্রিয় থাকবেন।
লিওনার্দোর সবচাইতে বড় যে গুনটি ছিল সেটি হচ্ছে তিনিছিলেন একজন এম্বিডেস্কট্রস অর্থাৎ তিনি একই সাথে তার দুটি হাত দিয়ে লিখতে পারতেন। তবে অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে একই সময়ে তিনি এক হাত দিয়ে লেখা এবং অন্য হাতে আর্ট করতে পারতেন।
ভেঞ্চির আরেকটি অদ্ভুত বিষয়ছিল তিনি মিরর আর্ট অর্থাৎ আমরা সাধারন লেখা গুলকে যদি আয়নার সামনা সামনি করে ধরি তাহলে সেই লেখাগুল যেমনটা উল্টো দেখাবে হুবুহ তেমন উল্টোকরে তিনি লিখতে পারতেন। বলা হয় ভিঞ্চি উল্টো করে সিক্রেট কিছু লিখতেন। যা সে সময়ে অনেকেই বুঝতে পারতেননা।
১৯৯৪ সালে বর্তমানে অন্যতম ধনি ব্যাক্তি বিল গেটস লিওনার্দোর লেখা বই কোডেক্স হ্যামারকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করেছিলেন। যেই বইটিতে ভিঞ্চি অনক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। মজার বিষয় হচ্ছে এই বইটিকেও ভেঞ্চি মিরর আর্টে লিখেছিলেন। পরে অবশ্য বিল গেটস এই বইটির একটি অনলাইন ভার্সন সকলের জন্য উন্মুক্ত করেদেন।
বলা হয় ভিঞ্চি চিকিৎসা বিদ্যায় আরো জ্ঞান লাভের জন্য রাতের অন্ধকারে কবর স্থানে গিয়ে সেখানকার কবর খুরে সেই লাশ নিয়ে গবেষনা করতেন। যার ফল সরুপ ভিঞ্চি মানুষের শরীরের দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এমন ভাবে একেছিলেন যা এখন আমরা টেকনোলোজির যুগে এসে দেখতে পাচ্ছি।
লিওনার্দো যখন কারো ছবি আকতে চাইতেন তখন অনেকটা সময় সেই ব্যাক্তির সাথে তিনি কাটাতেন। এবং বাড়ি ফিরে ভিঞ্চি সেই লোকের এমন চিত্র আকতেন যা দেখে সকলের মন হত সেই ব্যাক্তিটি বোধয় ভিঞ্চির সামনেই বসে আছেন।
ভিঞ্চি বলতেন যদি কোন চিত্রশিল্পী ছবি আর্ট করতে চায় তাহলে তাকে আয়নার মত হওয়া প্রয়োজন। যেন সে তার সামনে যা দেখবে তার হুবহু রুপ সেই চিত্রকর্মে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
দা ভিঞ্চি ৫০০ বছর পূর্বে প্যারাসুট, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তির ডিজাইন করে গিয়েছিলেন। যে কারনে এই সকল কিছুর জন্য এখনো তাকে এর জনক বলা হয়।