গরিলা এমন এক প্রাণী যার সঙ্গে মানুষের খুব মিল রয়েছে। শিম্পাঞ্জিদের পরে এরাই মানুষের নিকটতম সমগোত্রীয় প্রাণী।
এদের সাথে মানুষে ডিএনএ-এর ৯৭-৯৮% মিল রয়েছে।
আজ আমরা এই প্রাণী সম্পর্কেই জানা-অজানা নানা তথ্য জানতে চলেছি।
নামকরণ:
ইংরেজিতে Gorillas.
বৈজ্ঞানিকনাম:
প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নামও Gorilla.
পরিবার:
এরা কর্ডাটা পর্বের primates বর্গের Hominidae পরিবারের অন্তর্গত এক স্তন্যপায়ী প্রাণী।
প্রজাতি:
প্রাণীগুলোকে ২টি প্রজাতিতে ভাগ করা হয়।
পাহাড়ী গরিলা এবং সমতলের গরিলা।
কিছু প্রজাতির নাম হলো-
প্যটিকেক
স্যামসন
ট্যাক্সোনমি
জাম্বো
হারাম্বে
টিমি
বোকিটো
উইলিবি.
কোকো।
উৎপত্তিরআদিস্থান:
প্রাকৃতিকভাবে এদের বাস আফ্রিকা মহাদেশে গহীন জঙ্গলে।
প্রাপ্তিস্থান:
গরিলারা নিরক্ষীয় বা উপনিরক্ষীয় বনাঞ্চলে বাস করে।
সমতলের গরিলা সমুদ্রতল থেকে ২২২৫-৪২৬৭ মিটার উচ্চতায় বাস করে।
আকার–আকৃতি:
গরিলার উচ্চতা প্রায় মানুষের সমান। একটি পুরুষ গরিলার উচ্চতা ৫ ফিট ৭ ইঞ্চি থেকে ৫ ফিট ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। আর মহিলা গরিলা পুরুষদের তুলনায় একটু খাটো হয়।
ওজনের দিক থেকে একটি পুরুষ গরিলা ১৩৫-১৮০ কেজি এবং মহিলা গরিলা প্রায় ৭০-১১৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
গঠনওবৈশিষ্ট্য:
এই প্রাণী মুখ কদাকার, গায়ের রঙ কুচকুচে কালো। সম্পূর্ণ শরীর ঘন কালো লম্বার লোমে ঢাকা। এদের শরীরে প্রচুর শক্তি।
সাধারণত এরা ৪ পায়ে হাঁটে। তবে দু’পায়েও ভর করেও কিছুটা কুঁজো হয়ে চলতে পারে। একেকটি গরিলা ঘন্টায় ২০-২৫ মাইল গতিতে চলতে সক্ষম।
বিশালাকার হলেও এই প্রাণীগুলো বেশ নিরীহ প্রজাতির। তবে এরা খুব বুদ্ধিমান প্রাণী।
এদের যোগাযোগের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। যার মধ্যে ২৫টি করা হয় স্বতন্ত্র কন্ঠস্বরের মাধ্যমে।
এই প্রাণীগুলো খুব বেশি পানি পান করে না। এদের অদ্ভুদ একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা যখন পানি পান করে তখন তাদের হাতের পেছনের লোম ভিজিয়ে নেয়। এরপর তারা সেই লোম থেকে শুষে পানি পান করে!
খাদ্যাভ্যাস:
এরা নিরামিষভোজী প্রাণী। বন-জঙ্গলের গাছ, লতাপাতা, গাছের ফল, কাণ্ড, বাঁশের অঙ্কুর ইত্যাদি খেয়ে এরা বেঁচে থাকে।
একটি পূর্ণবয়স্ক গরিলা দিনে প্রায় ৩০ কেজি খাবার গ্রহণ করতে পারে।
বাসস্থান:
পরিবার গঠনের মাধ্যমে এই প্রাণীগুলো বসবাস করে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে সিলাভারব্যাক বলা হয়। আর পরিবারের রক্ষণাবেক্ষণসহ সমস্ত রকম দায়িত্ব পালন করে সিলভারব্যাক।
গোটা বিশ্বে পাহাড়ে বসবাসকারী গরিলার সংখ্যা মাত্র ৭০০।
বংশবিস্তার:
যৌন প্রজননের মাধ্যমে এরা সন্তান উৎপাদন করে থাকে।
একটি গরিলা পরিবার
গর্ভকাল ৮ মাস। একবারে এরা ১টি সন্তানই ধারণক্ষম হয়ে থাকে।
আয়ু:
বিশালাকৃতির এই প্রাণী ৩৫-৪০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
তবে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এরা ৫০ বছরেরও বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে।
মূলত এই প্রাণীগুলো ঘন জঙ্গলে বসবাস করে। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এরা এখন দারুণ হুমকির মুখে পরেছে।
এছাড়া বিশ্ব উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে গাছগাছালি কমে যাওয়া, খাদ্য হিসেবে ফল লতাপাতা কমে যাওয়ার কারণে খাদ্য সংকটে পরেছে এই প্রাণী গুলো।
অন্যদিকে আবার কোন কোন দেশে শিম্পাঞ্জি, উল্লুক, গরিলা এদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যা খুবই পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু।
এছাড়াও শিকার, বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা বা চুরির প্রকোপে পরেও দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে বিশালাকৃতির এই প্রাণীগুলো।
একারণে সংকটাপন্ন বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় সবার উপরে স্থান গরিলার।
লেখাটি এমন ভাবে না লিখে বাক্যগঠন করে সুন্দর করে সাজিয়ে লিখলে পড়তে আরও ভাল হয়।