ম্যান সিটি-পিএসজিকে ঘিরে চলা নানা গুঞ্জনের মধ্যে রোনালদো পেলেন দুঃসংবাদ
ম্যান সিটি-পিএসজিকে ঘিরে চলা গুঞ্জনের মধ্যে রোনালদো পেলেন দুঃসংবাদ
এবারের দলবদল মৌসুমে শুধু গত কয়েক দিন ধরেই চলছে নানা গুঞ্জন। একবার বলা হচ্ছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো জুভেন্টাস ছাড়ছে পরক্ষণেই বলা হলো ছাড়বেন না।
আবার তাকে নিয়ে টানাপোড়েন চলছে ম্যান সিটি এবং পিএসজিতে। কেউ কেউ তো বলছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যাবেন পিএসজিতে। এবং সকলের আকাঙ্খিত ইতিহাস গড়া ত্রয়ী গড়বেন লিওনেল মেসি ও নেইমারের সঙ্গে।
আর এতসব খবরের মধ্যে রোনালদোর রিয়াল মাদ্রিদে ফিরে যাওয়ার গুঞ্জনে পানি ঢেলে দিয়েছেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ এবং কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
ম্যান ইউনাইটেডে ফেরার গুঞ্জনেও খুব একটা হাওয়া লাগেনি। সবচেয়ে জোর গুঞ্জনটি হলো পিএসজি আর ম্যানচেস্টার সিটিকে ঘিরেই।
শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনগুলোর কোনোটি সত্যি হবে? রোনালদো জুভেন্টাস ছেড়ে কি অন্য কোথাও যাবেন? না কি নয়? -সেটা ভবিষ্যৎ বলবে।
তবে দলবদল নিয়ে এত এত গুঞ্জনের মধ্যে আজ রোনালদো পেলেন দুঃসংবাদ। জুভেন্টাসের অনুশীলনে বাহুতে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন ৩৬ বছর বয়সী এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
তার আগে খেলার প্রস্তুতির জন্য দলের অনুশীলনে আজ ব্রাজিলিয়ান লেফটব্যাক আলেক্স সান্দ্রোর চ্যালেঞ্জে ডান বাহুতে ব্যথা পান রোনালদো। বাহু চেপে ধরে হাঁটতে হাঁটতে মাঠ ছাড়তে হয়েছে রোনালদোকে। সে সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জুভেন্টাসের চিকিৎসক দলের সদস্যরা।
এম্পোলির বিপক্ষে ম্যাচে অংশ নেওয়ার আগে তাঁর চোটের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছে স্কাই স্পোর্টস।
তবে দলবদলের এই সময়টায় এসব ছোটখাটো চোটকে অনেকে অবশ্য অন্য চোখেও দেখে থাকেন।
অন্য ক্লাবে যাওয়ার আগমুহুর্তে দলবদলের আলোচনা যখন চলতে থাকে সেসময়ে খেলোয়াড়দের ‘চোটে’ পড়ে মাঠের বাইরে থাকার ঘটনা তো আর বিরল নয়। এমন উদাহরণ রয়েছে অহরহ।
রোনালদোও তেমনই কোনো কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন? নাকি তাঁর চোটটা আসলেই গুরুতর- সে সম্পর্কে এখনো কেও নিশ্চিত নয়।
তবে এ কথা সত্য, দলবদলের গুঞ্জনের মধ্যে রোনালদোর জুভেন্টাসের দল থেকে নিজেকে দূরে রাখার ঘটনা গত সপ্তাহেও দেখা গেছে।
উদিনেসের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার মাধ্যমে গত রোববার এবারের লিগ মৌসুম শুরু করেছে জুভেন্টাস। কিন্তু সে ম্যাচের একাদশে ছিলেন না রোনালদো। মাঠে নেমেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে।
আবার যোগ করা সময়েও একটু বিব্রতবোধ হতে দেখা গেছে তাঁকে।
ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র ছিল। তারপর যোগ করা সময়ে রোনালদো বল জালে জড়ায়৷ ভেবেছিলেন, দলকে জিতিয়ে ফেলেছেন। তাই স্বভাবতই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। এমনকি জার্সি অব্দি খুলে ফেলেন।
কিন্তু পরে দেখা গেলো, গোলের সময়ে রোনালদো আসলে অফসাইড ছিলেন। একারণে জার্সি খোলায় উল্টো হলুদ কার্ড দেখেছেন!
সেটি এক পাশে রেখে রোনালদোর সেদিন একাদশে না থাকাটাই সবার চোখে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। পরে অবশ্য জুভ কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি জানিয়েছিলেন যে, কৌশলগত কারণেই রোনালদোকে একাদশে রাখা হয়নি।
কিন্তু দলবদলের বিষয় খবর জানিয়ে বিখ্যাত হয়ে ওঠা ইতালিয়ান সাংবাদিক ফাব্রিজিও রোমানো সেদিন টুইটারে টুইট করেছিলেন, রোনালদো নিজে থেকেই একাদশে থাকতে চাননি।
দলবদল মৌসুমের বাকি কয়েক দিনের মধ্যে তিনি নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করে নিতে চান।
তবে জুভেন্টাস রোনালদোর জন্য এখনো কোনো প্রস্তাব পায়নি বলেও নিশ্চিত করেছেন রোমানো।
তাঁর ভাষ্যমতে, প্রস্তাব পায়নি বলেই হয়তো জুভেন্টাস ধরে রাখছে, ক্লাবের সঙ্গে চুক্তির বাকি থাকা ১ মৌসুম। অর্থ্যাৎ আগামী মৌসুমটা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো জুভেন্টাসেই থাকবেন।
কিন্তু এরপরও দলবদলের গুঞ্জন তো আর থেমে নেই।
ম্যান সিটির কাছে রোনালদোর মুখপাত্র প্রস্তাব নিয়ে গেছেন, যাতে সিটি রোনালদোকে নিয়ে নেয়। কিন্তু রোনালদোকে পেতে ব্যয় করতে হবে ২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। এত খরচ করতে রাজি নয় সিটি। বরং তারা বিনা মূল্যেই রোনালদোকে পেতে আগ্রহী।
কিন্তু জুভেন্টাস আবার এই প্রস্তাবে রাজি নয়।
সর্বপরি গুঞ্জনটা সত্যি হলে সেটি হয়তো ২ দলের দলবদলের বাজারে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ লাভ বের করারই এক কৌশল।
ইউরোপে আগে থেকে খবর শোনা যাচ্ছলো যে, রোনালদোর বছরে ৩১ মিলিয়ন বা ৩ কোটি ১০ লাখ ইউরো কর–পরবর্তী বেতনের বোঝা জুভেন্টাস বইতে পারছে না (কারণ করসহ জুভেন্টাসের খরচ আরও অনেক বেশি দাঁড়ায়)।
আর একদিকে ম্যানচেস্টার সিটিকে ঘিরে গুঞ্জন রয়েছে, অন্যদিকে এমবাপ্পে পিএসজি ছাড়লে সেখানে মেসি-নেইমারের সঙ্গে রোনালদোকে মিলিয়ে ‘স্বপ্নের ত্রয়ী’ গড়ার কথা ভাববে পিএসজি, এমন গুঞ্জনও উঠে এসেছে।
এরকম দ্বিধাদ্বন্দ্বের মুহূর্তে রোনালদোর চোট কি দলবদলে বাধা হয়ে দাঁড়াবে? না কি দলবদলের কাজ সুন্দরভাবে সেরে নিতেই চোটের কথা আসছে? সেটা সময় বলবে।