আমেরিকার বিপুল অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এখন তালেবানের হাতে 

আমেরিকার বিপুল অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এখন তালেবানের হাতে 
আমেরিকার বিপুল অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এখন তালেবানের হাতে 

কাবুল দখলের মাধ্যমে কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতা নয়, রাতারাতি বিপুল সামরিক শক্তির অধিকারী হয়ে গেছে তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিভিন্ন অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এখন তালেবানের হাতে।

গত দুই দশকে আফগান বাহিনীকে এইসব অস্ত্র, সামরিক যান, নজরদারির সরঞ্জাম সহ হেলিকপ্টার দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

১১ সামরিক ঘাঁটিসহ সেনাদের ফেলে যাওয়া সব অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এখন তালেবানের হাতে।

মার্কিন সেনাদের ব্যবহৃত আধুনিক সামরিক যান, হাম্ভিতে এখন উড়ছে তালেবানের পতাকা। এমন ২ হাজারের বেশি সাজোয়াযুক্ত যান, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে গোষ্ঠীটি।

যে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রগুলোর একেকটির মূল্য ৩ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা আড়াই কোটি টাকারও বেশি।

দীর্ঘদিন ধরে কালাশনিকভ একে-৪৭ এর মতো অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করে আসা তালেবান যোদ্ধাদের হাতে এখন শোভা পাচ্ছে এম-৪ কার্বাইন এবং এম-১৬ এর মতো অত্যাধুনিক সব সমরাস্ত্র।

কারণ মার্কিনীদের ফেলে যাওয়া আধুনিক সব অস্ত্রাগারের দখল নিয়েছে তালেবান।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে গেল ২ বছরের তারা আফগান বাহিনীর পেছনে খরচ করেছে ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিনে দিয়েছে অত্যাধুনিক সব নজরদারি সরঞ্জাম।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে যার সবই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এক সভায় বলেছেন, “মার্কিন  সামরিক বাহিনী যেসকল সামরিক অস্ত্র আফগান বাহিনীকে দিয়েছিল তা এখন তালেবানের হাতে চলে গেছে। আফগানিস্তান থেকে যখন মার্কিনীদের সরিয়ে আনা হচ্ছিল তখনই তারা এসব দখল করে নেয়। এতেই এটা পরিষ্কার যে সেখানে মার্কিনী সেনা উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”

১১টি সেনা ঘাঁটি দখল করে শুধুমাত্র যান বা অস্ত্রই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের এ ২৯, সুপার টুকানো যুদ্ধবিমান, ব্ল্যাক হোপ, স্কাউট এ্যাটাক, মিলিটারি ড্রোন সহ দুইশতাধিক হেলিকপ্টার পেয়েছে তালেবান।

এমনকি ভারতের এমআই ৩৫ হেলিকপ্টারও দখলে নিয়েছে তারা।

তবে বিশাল অস্ত্রভাণ্ডার আর আধুনিক যুদ্ধযান নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিশেষ প্রশিক্ষণ ছাড়া তালেবান এগুলো পরিচালনা করতে পারবে না বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।

তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক:

আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিয়ে নিলেও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না তালেবান। বলছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের দ্যা আফগানিস্তান ব্যাংক বা ডিএবি এর নিয়ন্ত্রণ কোনভাবেই তালেবানের হাতে দিবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট।

বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে বলা হয়েছে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এখন ৯’শ কোটি ডলার। যেটার বেশিরভাগের নিয়ন্ত্রণ এখন আমেরিকার হাতে।

শুধু তাই নয় তালেবানের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর কোটি ডলারের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক ঋণ আর অর্থ সহায়তাও হুমকির মুখে পড়েছে।

ডিএবি’র সাবেক গভর্ণর জানায় আফগানিস্তানের অর্থনীতিতে ধ্বস নামবে খুব শীঘ্রই।

সাবেক গভর্ণর আজমল আহমাদি জানান, তালেবান এখনো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে। দেশের সম্পদ জব্দ করা থাকবে কিন্তু তালেবানের হাতে তা যাবে না।

বিশ্লেষকরা মনে করছে আফগানিস্তানের এ সম্পদে তালেবানের অধিকার প্রতিষ্ঠা খুব সহজ হবে না।

আরো পড়ুন:
আফগানিস্তান নিয়ে নাক গলাবেন না: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন 
আফগানিস্তান ইস্যুতে জো বাইডেনের  ভাষণে যা যা বলা হলো 
দশকের পর দশক ধরে আফগানিস্তানে যুদ্ধ কেন চলছে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রায় ৯৫০ কোটি ডলারের সম্পদ স্থগিত রাখা হয়েছে।

এই অর্থ তালেবানের নেতৃত্বাধীন সরকারের হাতে যাওয়া ঠেকাতে দেশটিতে নগদ অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ডিএবির কোন সম্পদ তালেবানের হাতে যাবে না বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।

জুনে প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও ২০২১ সালে ডিএবির আন্তর্জাতিক রিজার্ভ ৯৫০ কোটি ডলার অনুমান করেছিল।

তবে ৩৬ কোটি ১০ লাখ ডলার মূল্যের ডিএবির বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ও শাখার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে রাখাছিল।

শুধুমাত্র এই অর্থগুলোই বর্তমানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

subscribe to our youtube channel 2

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন