লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ কি? লিভার পরিষ্কার করবেন কিভাবে?

লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ কি? লিভার পরিষ্কার করবেন কিভাবে?
লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ কি? লিভার পরিষ্কার করবেন কিভাবে?

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লিভার। বলা যায়, লিভার আমাদের শরীরের পাওয়ার হাউস। তাই আমাদের প্রত্যেকের এখন থেকেই লিভারের যত্ন নেয়া জরুরি। এজন্য লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ অর্থ্যাৎ লিভার পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

লিভার আমাদের শরীরের জন্য এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে কোনভাবে যদি এটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে শরীরের এনার্জি কমে যাবে। রোগী দুর্বল হয়ে পড়বে এবং অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠবে।

অনিয়মিত জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত ওজনের কারণে অনেক সময় আমাদের লিভার সিরোসিস, লিভারে চর্বি জমতে আরম্ভ করে।

লিভারে এই চর্বি জমাকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে এর কারণে মারাত্মক বিপদও হতে পারে।

লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ একটি অভিনব শব্দ, যা আসলে খাদ্যতালিকার পরিবর্তনকে বোঝায়। অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে লিভারে জমে থাকা চর্বি বা ময়লা দূর করার উপায়কেই লিভার পরিষ্কার করা বলা হয়।

লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এই ডিটক্স পদ্ধতি। নিত্যদিনকার খাবারের তালিকা থেকে কিছু খাবার গ্রহণ এবং বর্জনের মাধ্যমে আপনি সহজেই লিভারকে পরিষ্কার করতে পারবেন।

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক লিভার ডিটক্স বা পরিষ্কার করার কিছু উপায় সম্পর্কে-

  • পানি হচ্ছে সর্বকালে সেরা ফ্লাশিং এজেন্ট। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ এটি আপনার লিভার ও কিডনি পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।

এজন্য প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি অবশ্যই পান করতে হবে। এবং তার পাশাপাশি ডিটক্স ওয়াটারও পান করতে পারেন।

ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করতে- শসা, লেবুর স্লাইস, আদার টুকরো ও কিছু পুদিনা পাতা সারারাত রেখে সকালে ওই পানি পান করুন।

  • ওজন অতিরিক্ত হওয়ার কারণে অনেকেই লিভারের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। এ থেকে রেহাই পেতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই।

নিয়মিত শরীরচর্চাই পারে আপনার ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে চর্বির পরিমাণ কমাতে।

একই সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বা লিভার সিরোসিস (প্রদাহ ও দাগ) থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে।

  • লিভার ডিটক্স করতে চাইলে খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা জরুরি। এজন্য অবশ্যই অর্গানিক শাক-সবজি এবং ফল-মূল রাখতে হবে। এগুলো আপনার লিভারকে সুস্থ রাখবে।

একই সঙ্গে রসুন, হলুদ, আখরোট, সাইট্রাস ফল, বিট, গাজর, গ্রীন টি, আপেল ও অ্যাভোকাডো খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন।

  • চর্বি ও লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, এগুলো অস্বাস্থ্যকর। এগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে আপনার লিভার দ্রুত পরিষ্কার হবে।

অস্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবার ফ্যাটি লিভার আর লিভার সিরোসিস হওয়ার মূল কারণ।

এর বদলে বাদাম, নারকেল, চিয়া বীজ, ফ্লেক্স বীজ, কুমড়ার বীজ, আখরোট, ডিম এবং চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন) খেতে পারে। এসবেও চর্বি থাকে তবে তা স্বাস্থ্যকর চর্বি।

  • লিভার রক্তে চিনির মাত্রা হজম করার জন্য দায়ী। রক্তে অতিরিক্ত চিনির উপস্থিতি লিভারের কার্যকারিতা নিঃশেষ করে দিতে পারে। তাই লিভার ভালো রাখতে হলে দৈনিক চিনি খাওয়ার মাত্রা ২০-৩০ গ্রাম অথবা এরও কম রাখতে হবে।

আরো পড়ুন:
হাইপক্সিয়া এবং হ্যাপি হাইপক্সিয়া কী? কোভিড আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কি এটা প্রাণঘাতী? 
ফুসফুস ক্যান্সার কি? এর কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা 
হাড় ক্ষয় রোধে সচেতনতা অবলম্বন ‍সম্পর্কে কিছু তথ্য
  • অত্যাধিক অ্যালকোহল পান করা কখনই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। অ্যালকোহল গ্রহণ ফ্যাটি লিভার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। এই বদভ্যাসের কারণে লিভারের কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। তাই যতটা সম্ভব অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।

  • সুস্থ লিভার পেতে হলে মেডিটেশন ও ইয়োগা করাও জরুরি। এটি আপনার স্ট্রেস ম্যানেজ করতে প্রচুর সহায়ক। এর ফলে আপনার কর্টিসলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যা আপনার লিভারের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।

subscribe to our youtube channel 2

শেয়ার করুন -

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন