খুলনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা; ক্ষতিপূরণের আশ্বাস, গ্রেফতার বেড়ে ১১
খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামে মন্দির, হিন্দু মালিকানাধীন দোকানপাট ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
খুলনার সেই এলাকা জুড়ে পুলিশ এবং র্যাব মোতায়েন রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে মন্দির-বসতভিটা ভাঙচুর ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযুক্ত আরও একজনকে রোববার রাতে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেন।
এ নিয়ে মোট এই হামলার সঙ্গে যুক্ত মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। গ্রেপ্তার হওয়া সব অপরাধীই পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে তিনি জানান।
সেখানকার স্থানীয়দের অভিযোগ, গত শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ উত্তেজিত জনতা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানায়।
এরপর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ মহানগর, জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদ, ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একাধিক নেতারা ।
এ সময় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা হামলা-ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন।
খুলনার রূপসা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাসনিম জানিয়েছেন, যেসব বাসিন্দারা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
একইসঙ্গে ভাঙচুর করা মন্দির ও শ্মশানের সংস্কারও করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীঘ্রই মন্দির মেরামতের কাজ আরম্ভ করা হবে।
এছাড়াও সম্পূর্ণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রাদায়িক ভাবের উন্নতি ও পরস্পরের হৃদ্যতা বজায় রাখতে তারা কাজ করছেন বলেও তিনি জানান।
সাংবাদিকদের তোলা ছবি থেকে দেখা যায়, সেখানকার অন্তত ৪টি মন্দিরের প্রতিমা, শ্মশানের নানা উপকরণ, ছোট ছোট দোকান এবং একটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি এও অভিযোগ করেছেন যে, হামলাকারীরা তার বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়েছে।
খুলনায় হামলা ও ভাঙচুরের এ ঘটনায় রূপসা উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি শক্তিপদ বসু ২৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরো ২০০ জনকে আসামি করে স্থানীয় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রূপসা উপজেলা ও পুলিশ কর্মকর্তা মারফত জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় মসজিদে নামাজ চলাকালীন অবস্থায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ‘গান-বাজনা’ করছিলেন- এমন এক অভিযোগে হিন্দু-মুসলিম ২ পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয়।
তবে রূপসার ইউএনও জানান, ওই দ্বন্দ্বের সমাধান সেদিনই করা হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং, ওই ঘটনার সঙ্গে শনিবারের হামলার কোন সম্পর্ক নেই।