মানসিক অবসাদ কাটাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্রিকেট থেকে বিরতি নিলেন বেন স্টোকস
অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্রিকেট থেকে বিরতি নিলেন বেন স্টোকস
কোয়ারেন্টিন পর্ব, আইসোলেশন ও জৈব সুরক্ষা সব মিলিয়ে করোনাকালীন এই সময়ে ক্রিকেটারদের খেলার জন্য পোহাতে হচ্ছে নানা ধকল। এসবের পাশাপাশি আবার দীর্ঘদিন পরিবার থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে তাদের। এসব নিয়েই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বন স্টোকস।
অলরাউন্ডার ক্রিকেটার বেন স্টোকসের কাছে ঋণী ইংল্যান্ড ও ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ড বা ইসিবি।
দেশটিকে একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার মতেরা কীর্তি তো রয়েছেই, এর পাশাপাশি কিছুদিন আগে যখন মূল ওয়ানডে দলকে করোনা মহামারির কারণে পাকিস্তান সিরিজ থেকে ছিটকে দিয়েছিল, সে সময়ে হাতের আঘাত উপেক্ষা করেও অনভিজ্ঞ এক ক্রিকেট টিমকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ফিরেছিলেন এই অলরাউন্ডার ক্রিকেটার।
সম্পূর্ণ সুস্থ না হয়েও প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে সে সিরিজটি খেলার ব্যাপারে স্টোকস বলেছেন, দল এধরণের বিপদে না পড়লে হাতে এমন চোট নিয়ে খেলার কথা কখনো চিন্তাও করতেন না।
এমন এক নিবেদিতপ্রাণ ক্রিকেটারকে ভারতের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজে পাবে না ইংল্যান্ড।
যদিও হাতে চোটের কারণে এমনিতেও শুরু দিকে ম্যাচ ২টি খেলা হতো না তার। কিন্তু আজ তো একেবারে সিরিজ থেকেই নাম কাটিয়ে নিয়েছেন।
সেই সঙ্গে আবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেন স্টোকস।
তবে এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সরাসরি কোনো কারণ দর্শানো হয়নি।
তবে ইসিবির এক বিবৃতিতে যে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে, সেটার মাধ্যমে বোঝা গেছে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তির লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত বেন স্টোকসের।
কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন ও জৈব সুরক্ষা মিলিয়ে ক্রিকেটারদের দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়। এবং নিজ পরিবার থেকেও অনেক দিন দূরে থাকতে হচ্ছে।
এর পাশাপাশি গত ১ বছর অনেক বড় একটা সময় সফরে কাটিয়েছেন বেন স্টোকস।
এমনকি এসব পর্ব মেনে চলার জন্য ঘরের মাঠের খেলাগুলোতেও পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়েছিল তাকে।
এরই মাঝে পাকিস্তানের সঙ্গে গত বছর সিরিজের মাঝপথে একবার নিউজিল্যান্ডে বাবাকে দেখতে গিয়েছিলেন। তারউপর ডিসেম্বর মাসে বাবার মৃত্যু সংবাদও পেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ইংল্যান্ডের ছেলেদের ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাশলি জাইলস বলেছেন, ‘নিজস্ব অনুভূতি এবং ভালো থাকার ব্যাপারে মুখ খুলে বেন অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। সব সময় আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল আমাদের লোকজন যেন মানসিকভাবে ভালো থাকে তা দেখা, তাদের সুরক্ষা প্রদান করা।
স্বাভাবিক সময়ের মধ্যেই খেলার জন্য প্রস্তুত হওয়া এবং শীর্ষ মানের খেলা দর্শকদের উপহার দেওয়া অনেক চাপ সৃষ্টি করে। বর্তমান কোভিড মহামারির সময়ে সেটা আরও বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে।’
করোনার কারণে ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাস্থ্যের যে কী হাল সেটাও প্রকাশ পেয়েছে জাইলসের করা বিবৃতিতে, ‘অনেক বড় একটা সময় নিজের পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থাকা, একইসঙ্গে ন্যূনতম স্বাধীনতার মধ্যে দিন কাটানো খুবই কঠিন।
গত ১৬ মাস যাবৎ ধারাবাহিকভাবে এমন আবহের মধ্যে কাটানো খেলার প্রভাব সব খেলোয়াড়দের মধ্যেই পড়েছে।
বেনের যতটুকু সময় দরকার ততটুকুই পাবে, এ নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। আশা করছি ভবিষ্যতেও আমরা ইংল্যান্ডের হয়ে তাঁকে খেলতে দেখব।’
উল্লেখ্য, ইংল্যান্ডের টেস্ট স্কোয়াডে স্টোকসের বিকল্প হিসেবে ক্রেগ ওভারটনকে নিযুক্ত করা হয়েছে