শৈশবই হচ্ছে একটি শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির সঠিক সময়৷ তাই এই সময় এমন খাবার খাওয়া উচিত যা তার স্বাস্থ্য এবং বুদ্ধির বিকাশে উপযোগী। আর এক্ষেত্রে অর্গানিক খাবার বেশ সহায়ক।
একটি কথা মনে রাখবেন, শিশু যত বেশি ‘ফাস্ট ফুড’ খাবে ততই তার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমতে থাকবে।
আর এই তথ্যটি মিলেছে ‘বার্সেলোনা ইন্সটিটিউট ফর গ্লোবাল’ এবং ‘পেরে ভির্হিলি হেল্থ রিসার্চ ইন্সটিটিউট’য়ের গবেষণার ফলাফলে।
‘এনভায়রনমেন্টাল পলিউশন’য়ের ২০২১ সালের সংখ্যায় প্রকাশিত এই গবেষণাকার্যের জন্য ১,২৯৮ জোড়া মা ও ছেলের ওপর দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ চালানো হয়। সেসব সন্তানদের বয়স ছিল ৬ থেকে ১১ বৎসর।
এতে গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন যে, স্কুলগামী শিশুদের ভেতর জৈব বা অর্গানিক খাবার গ্রহণের ফলাফল হিসেবে তাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হয়, যেকোনো তথ্য মনে রাখার ক্ষমতা এবং সেইসাথে বুদ্ধিমত্তাও বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, যৌক্তিক ও অন্যান্য জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতাও বেড়েছে।
অপরদিকে, ভাজাপোড়া কিংবা ফাস্টফুড, জনাকীর্ণ বাড়িতে থাকা, ধূমপান ও তামাকের সংস্পর্শ এসব স্মৃতিশক্তি হ্রাসের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।
ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সেই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে গবেষণাটির সহ-লেখক এবং ‘আইএসগ্লোবাল’স চাইল্ডহুড অ্যান্ড এনভারনমেন্টাল পোগ্রাম’য়ের প্রধান মার্টিন ভিরহেইড বলেছেন, “আমরা বেশ কয়েকজন বাবা-মার দিকে লক্ষ্য করেছি। যাদের সন্তান হওয়ার সময়কার সেখানের পরিবেশ ছিল দূষিত (অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণ এবং তামাকের ধোঁয়া)। এবং তাদের জীবনযাত্রার অভ্যাসগুলো (খাদ্যাভ্যাস, ঘুম ও পারিবারিক সামাজিক মূল্যবোধ) এসব শিশুদের আচরণগত সমস্যা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত।”
তবে গবেষকরা অত্যন্ত চমকপ্রদ কিছু তথ্যও পেয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের সবুজের প্রতি আকৃষ্টতা থাকার সঙ্গে শিশুর জ্ঞানীয় ক্ষমতার প্রভাব।
গবেষকরা আরও লক্ষ্য করেছেন যে, মায়ের অ্যালকোহল গ্রহণ উচ্চমাত্রার ‘পারফ্লুরুকট্যান সালফোনিক অ্যাসিড (এক ধরনের দূষণকারী পদার্থ) ও উচ্চ মাত্রার প্রসব-পূর্বকালীন পারদ এর স্তরগুলো জ্ঞানীয় কার্য সম্পাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত।
এগুলো বিভ্রান্তিকর এবং শিশুদের বিকাশে বিপরীত ফলাফল দিতে পারে বলে গবেষকদের ধারণা।
২০১৪ সালের করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব শিশুরা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার বেশি খায় তাদের মাঝে ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে বিজ্ঞান, গণিত এবং অন্যান্য পঠনের দুর্বলতা দেখা দিয়েছে।